ঘটনার ৪ দিন পরেও কৃষ্ণনগরে তরুণীর মৃত্যু খুন না আত্মহত্যা, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। এর মাঝেই সামনে এল মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণনগরের তরুণীর। এমনটাই উল্লেখ রয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। পিএম রিপোর্টে তরুণীর দেহে কোথাও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি ময়নাতদন্তে রিপোর্ট। তরুণীর গায়ে যখন আগুন লেগেছিল তখনও তিনি জীবিত ছিলেন। তাঁর শ্বাসনালী থেকে মিলেছে কার্বন। যা আগুনের ধোঁয়া থেকে উৎপন্ন হয়েছে। কিন্তু ময়না তদন্তে রিপোর্টে বিষয়টি আগুন লেগে মৃত্যু নাকি নিছক আত্মহত্যা বা কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই বলা হয়নি।
কৃষ্ণনগর কাণ্ড নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। কীভাবে মৃত্যু হল ছাত্রীর? ধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুন? নাকি আত্মহত্যা? তা নিয়ে দানা বেঁধেছিল রহস্য। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন তদন্তকারীরা। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট কি আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করল? সে প্রশ্ন ফের একবার জোরালো হয়েছে। যদিও জেলা পুলিশ মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে।
রিপোর্ট বলছে, ছাত্রীর শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। প্রমাণ পাওয়া যায়নি ধর্ষণেরও। তবে আগুন লাগার সময় জীবিত ছিল সে। পুড়ে গিয়েছিল শরীরের ৯০ শতাংশ। তবে সেই আগুন নিজে লাগিয়েছে, নাকি অন্য কেউ, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী পরীক্ষার পর বিষয়টা স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল থেকে আগে একটি কেরোসিনের বোতল ও দেশলাই বাক্স উদ্ধার করা হয়েছিল। ফরেন্সিক দল বোতল ও দেশলাই বাক্স থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। সেটিকে মৃত তরুণীর আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। ঘটনাস্থলেই আগুন লাগানোর ঘটনাটি ঘটেছিল কিনা, সে ব্যাপারেও তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল থেকে আগে একটি কেরোসিনের বোতল ও দেশলাই বাক্স উদ্ধার করা হয়েছিল। ফরেন্সিক দল বোতল ও দেশলাই বাক্স থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। সেটিকে মৃত তরুণীর আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। ঘটনাস্থলেই আগুন লাগানোর ঘটনাটি ঘটেছিল কিনা, সে ব্যাপারেও তদন্ত করা হচ্ছে। এ দিন শহরের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। যেখানে মঙ্গলবার রাতে ১০টা ৪০ মিনিটে একাই হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে ওই তরুণীকে। প্রসঙ্গত, গত বুধবার, ১৬ অক্টোবর সকালে কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপারের অফিস থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে একটি পুজো মণ্ডপের সামনে থেকে অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার পরিচয় জানা যায়। অভিযোগ, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন এবং খুনের পর প্রমাণ লোপাটে মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ছাত্রীর প্রেমিক রাহুল বসুকে গ্রেফতার করা হয়। সিট গঠন করে তদন্ত শুরু হয়। যদিও পুলিশে আস্থা নেই বলেই দাবি নির্যাতিতার পরিবারের। সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনায় নিহতের পরিজনেরা। এই পরিস্থিতিতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি।