পুলিশি তদন্তে আস্থা রাখতে পারছেন না কৃষ্ণনগরের নির্যাতিতা তরুণীর মা। সিবিআই তদন্ত চাইছেন তিনি। সেই মর্মে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনও জানাতে চলেছেন নির্যাতিতার মা। এমনকি পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, একাধিক কাগজে সই করানোর জন্য চাপ দিচ্ছে পুলিশ। কাগজ না পড়িয়েই সই করানোর চেষ্টাও হয়েছে।
বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের কাছেই উদ্ধার হয় অর্ধনগ্ন-অর্ধদগ্ধ তরুণীর দেহ। শুরুতেও ওই তরুণীর পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। কারণ তার মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে দেহটি চিহ্নিত করতে পারে পুলিশ। সেটি এক দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার। পরিবারের অভিযোগ, ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন করেছে তার প্রেমিক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে এখনই বলতে রাজি নয় পুলিশ।
পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানান,'তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে না আত্মহত্যা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। নির্যাতিতার মায়ের বয়ানের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারাও যোগ করা হয়েছে। তদন্তে যা যা প্রমাণ মিলবে, তার সাক্ষ্য হিসেবে যুক্ত করা হবে'।
এ দিকে,পরিবারের দাবি মেনে বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তার আগে সকালে নির্যাতিতার মা জানান,'গত কাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, তাতে আর পুলিশের উপর ভরসা রাখতে পারছি না। এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর পিছনে এক জন নেই। বাকিদের পুলিশ ধরছে না কেন?'
সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন নির্যাতিতার মা। তাঁর কথায়,'নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য মেয়ের খুনের তদন্ত করুক সিবিআই। বৃহস্পতিবারই আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাব। দরকারে বাড়ি বিক্রি করে লড়াই চালাব।'
পুলিশ সূত্রের খবর,নির্যাতিতার সঙ্গে কয়েক মাস ধরে সম্পর্ক ছিল ওই যুবকের। সে ভিন্রাজ্যে একটি হোটেলে কাজ করত। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ের কথাও পাকা হয়েছে। ওই যুবকের বাড়িতেও যেতেন ওই তরুণী। ওই যুবকের সঙ্গে প্রথম বিয়েতে আপত্তি থাকলেও পরে মেনে নেন মৃতার মা। তিনি জানান,'হবু বরের সঙ্গে মঙ্গলবার বেরিয়েছিল মেয়ে। রাতে বাড়ি না ফেরায় ফোন করেছিলাম, কখনও বলা হয়েছে মেয়ে নেই, কখনও আবার গালাগালাজও করা হয়েছে'। এদিকে নির্যাতিতার ফেসবুক স্টেটাসের সুইসাইড নোটের মতো লেখা,'আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়'। পরিবারের বক্তব্য, মেয়ে আত্মহত্যা করলে পোশাক কেন ছেঁড়া ছিল? কেনই বা মুখ পোড়ানো হয়েছিল?