গত দু'দিন ধরে উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। শুক্রবারও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এহেন আবহে সন্দেশখালিকে শান্ত করতে জারি করা হল ১৪৪ ধারা (Section 144)। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। যার নির্যাস, আজ অর্থাত্ শনিবার সকাল থেকেই শুনশান গোটা এলাকা। দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় লোকজন নেই। ত্রিমোহিনী বাজার-সহ সন্দেশখালি থানা এলাকায় ১৪৪ ধরা জারি। বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।
কী ঘটছে সন্দেশখালিতে?
বৃহস্পতিবার থেকে সন্দেশখালি থানার সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় জমি রক্ষা কমিটি ও আদিবাসীদের সংগঠন। মহিলারা লাঠি, ঝাঁটা, বাঁশ, দা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। শুক্রবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার পোলট্রি ফার্মে। শাহজাহান শেখ ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ফুঁসছেন সন্দেশখালির একটি বড় অংশের মানুষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শাহজাহান শেখ বাহিনী জোর করে তাঁদের জমি দখল করে বেআইনি ভাবে ভেড়ি তৈরি করে মাছ চাষ, গ্রামবাসীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার, টাকা না দিয়ে জোর করে কাজ করিয়ে নেয়। শাহজাহান শেখ সহ ঘনিষ্ঠ সবাইকে গ্রেফতার করা হোক। আবার পাল্টা শিবু হাজরার দলবলকেও এলাকার দখল নিতে ঝাঁপাতে দেখা গিয়েছে।
থমথমে রাস্তাঘাট, বন্ধ দোকান, পুলিশের রুটমার্চ
১৪৪ ধারা জারির পরে আজ থমথমে সন্দেশখালি থমথমে। শুরু হয়েছে রুটমার্চ। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও শুক্রবার রাতের মধ্যেই সন্দেশখালি পৌঁছে যান। সন্দেশখালির ঘটনায় বৃহস্পতিবার পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার ডিজি এসসিআরবি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, আইজি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এস আর ঝাঁঝারিয়া, ডিআইজি বারাসত সুমিত কুমার, এসপি বসিরহাট সহ বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ আধিকারিকরা সন্দেশখালি যান।
যদিও রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সেই সময়ের মতো পুরোটাই কন্ট্রোলে। অশান্তিতে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকালের ঘটনাতেও আট জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন সুকান্ত
অন্যদিকে, সন্দেশখালির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। চিঠিতে শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারের নাম উল্লেখ করেছেন সুকান্ত। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তদন্তে গিয়ে ইডি যেভাবে হামলার মুখে পড়েছিল, সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে চিঠিতে অভিযোগ সুকান্তর। যদিও শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ওখানে সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেসের প্ররোচনা রয়েছে।