Advertisement

সংখ্যালঘু 'গুরু' ফ্যাক্টর! বাংলায় একুশে ওয়াইসি লড়লে কাদের ক্ষতি?

বিহার ভোটে ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল AIMIM। বিহারের সীমাঞ্চলে ওয়াইসির জন্যই মহাগঠবন্ধনের খারাপ ফল হয়েছে। এবার আসা যাক পশ্চিমবঙ্গের কথায়।

আসাদউদ্দিন ওয়াইসিআসাদউদ্দিন ওয়াইসি
অরিন্দম গুপ্ত
  • কলকাতা,
  • 11 Nov 2020,
  • अपडेटेड 4:18 PM IST
  • বাংলায় মোটামুটি ২৭ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা
  • বাংলায় অঞ্চলভিত্তিক ভাবে মুসলিম ভোট ভাগ হয়
  • সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণ বদলে যেতে পারে

বাংলার নির্বাচনে সংখ্যালঘু বরাবরই 'গুরু' ফ্যাক্টর! মুসলিম ভোট টানতে কোনও দলেরই চেষ্টার কসুর থাকে না। মুসলিম ভোট পেলে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যায় পশ্চিমবঙ্গে। বাংলায় মোটামুটি ২৭ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা। এর মধ্যে খানিকটা অংশও কোনও দল পেলেই মোটামুটি রাজনৈতিক অঙ্ক বদলে যায়। 

কংগ্রেস-বাম-তৃণমূল ও মুসলিম ভোট

রাজ্য রাজনীতিতে একটু পিছনের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় অঞ্চলভিত্তিক ভাবে মুসলিম ভোট ভাগ হয়। কোনও নির্দিষ্ট দিক নেই। বামেদের সময় দেখা যেত, দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ মুসলিম ভোট যেত বামেদের দিকে। আবার উত্তর দিনাজপুর, উত্তর মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর সহ উত্তরবঙ্গের কিছুটা অংশ এবং মুর্শিদাবাদের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল কংগ্রেসকে সমর্থন জুগিয়েছে। উত্তর দিনাজপুর, উত্তর মালদহে মূলত অবাঙালি ঊর্দুভাষী মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। মুর্শিদাবাদের দিকে আবার বাঙালি মুসলমান বেশি। ওই বিস্তীর্ণ সীমান্ত অঞ্চলে প্রচুর বাংলাদেশি মুসলমানও রয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে সেই ভোটের বেশির ভাগটাই ধীরে ধীরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে চলে যেতে শুরু করে। ২০১১ সাল থেকে নির্বাচনগুলিতে মমতাতেই ভরসা রেখেছে বড় অংশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।

আরও পড়ুন

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ফ্যাক্টর

ওয়াইসি-র দল ইতিমধ্যেই উত্তর দিনাজপুর ও কলকাতার কিছু এলাকায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে শুরু করেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ও পশ্চিমবঙ্গে বিহারের সীমাঞ্চলে যে ভাবে AIMIM প্রার্থী দিয়েছে এবং লাগাতার প্রচার করেছে, সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটেও যদি AIMIM প্রার্থী দেয়, তা হলে সংখ্যালঘু ভোটের সমীকরণ বদলে যেতে পারে। উত্তর দিনাজপুর, উত্তর মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের যে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিকে যায়, তাতে থাবা বসাতে পারে AIMIM। 

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি

বিহার ভোটে ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল AIMIM। বিহারের সীমাঞ্চলে ওয়াইসির জন্যই মহাগঠবন্ধনের খারাপ ফল হয়েছে। এবার আসা যাক পশ্চিমবঙ্গের কথায়। বিহারে ভাল ফলের পরে মঙ্গলবারই ওয়াইসি জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২১ সালে তিনি রাজ্যে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেবেন। 'আজ তক'-কে ওয়াইসি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটেও প্রার্থী দেব। ক্ষমতা থাকলে আমাদের রুখে দেখাক।' এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস, বামেরা। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস।

Advertisement

রাজ্যের ২৭ শতাংশ মুসলিম ভোটের সামান্য অংশও যদি ওয়াইসির AIMIM-এর দিকে যায়, মমতার জন্য অনেক আসনে সেটা সমস্যা হবে। ২০১৯ সালেই লোকসভার আগে মমতা এক জনসভায় বলেছিলেন, 'সংখ্যালঘুদের মধ্যে উগ্রপন্থার বিষ ঢোকানোর চেষ্টা করছে অনেকে। হায়দরাবাদ থেকে এ রাজ্যে এসে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির অর্থ নিয়ে এ রাজ্যে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে একজোট হোন। সংখ্যালঘু ভাইবোনদের অনুরোধ করব কারও উসকানিতে ভুল করবেন না।'

আসাদউদ্দিন পাল্টা বলেন, 'বাংলার মুসলিমরা মানবতার সূচকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছেন, এটা বলা ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতাবাদ সৃষ্টি করা নয়। ক্ষমতা মমতাকে অসহিষ্ণু করে তুলেছে।'

আসাদউদ্দিন যদি পশ্চিমবঙ্গে প্রার্থী দেন, তা হলে মুসলিম ভোটের সমীকরণ বদলে যেতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসাদউদ্দিনের ঘোর বিরোধী। সে ক্ষেত্রে ওয়াইসি যদি বাংলায় মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসান, তাহলে তা রীতিমতো চিন্তার বিষয় মমতার কাছে।

Read more!
Advertisement
Advertisement