আধারের বিকল্প কার্ড দেবে রাজ্য সরকার। সোমবার বিশেষ পোর্টাল চালুর বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করছি। আধার বাতিল করে দিলে রাজ্যের পোর্টালে জানান। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। মানুষকে বঞ্চিত হতে দেব না আমরা। যা যা করার তা করব। যাঁদের নাম কেটে দিয়েছে, তাঁদের আমরা আলাদা কার্ড দেব। তাতে সব সুযোগ সুবিধা মিলবে। তারা যেন কোনও সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ক্যাম্প করে আলাদা কার্ড দেওয়া হতে পারে। তার আলাদা রেকর্ডিং থাকবে। সকলেই সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, 'কোনও গরিব মানুষকে আমরা না খেয়ে মরতে দেব না।' মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'আধার গ্রিভ্যান্সেস পোর্টাল' নামের একটি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। আগামিকাল থেকে সেই পোর্টাল শুরু হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভোটের আগে এমন কী ঘটল যে হাজার হাজার মানুষের কার্ড ইচ্ছামতো কেটে দেওয়া হচ্ছে। অসমের মতো ডিটেনশন ক্যাম্প করবেন? সংখ্যালঘু ও তফসিলি। মতুয়া সবচেয়ে বেশি। তফসিলি ফাউন্ডেশনের চিঠি। গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে এমন করা হচ্ছে।'
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখেই আধার বাতিল করছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার জানে না। জমিদারি কায়দায়। তাহলে করার প্রয়োজন কী ছিল? তারপর বলল আধার কার্ড না থাকলে ব্যাঙ্কে লিঙ্ক করা হবে না। ১,০০০ টাকা করে নেওয়াও হয়েছে। এটা রাজ্য সরকারের হাতেও ছিল না। এবং বলে দেওয়া হয়েছে আধার কার্ড ছাড়া কেউ কোনও সুবিধা পাবে না। তাহলে কি গরিব মানুষগুলো কোনও সুবিধা পাবে না?'
তিনি আরও বলেন, এটি NRC-র সঙ্গে সম্পর্কিত। আশ্বাস দিয়ে মমতা বলেন, 'সংখ্যালঘুই হোক, জেনারেল কাস্টই হোক, মুসলিম বন্ধুই হোক, আমি এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি বাংলায় আমরা NRC করতে দেব না। দুই বাংলায় ডিটেনশন ক্যাম্প আমরা করতে দেব না।'
এই বিষয়ে মতুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'যে মতুয়া বন্ধুদের তিনি বলেছিলেন সিটিজেনশিপ রাইট দেবে, আজ তাদের ফরেনার করে ডিক্লিয়ার করে দিয়েছে। এটা তাদের অপমান করা নয়?' মমতা বলেন, 'আগে আপনাদের আধার কেটে দেবে। তারপর ৫ বছর পর বলবে নাগরিকত্ব দেব। সংখ্যালঘু, দলিত ভাইবোনরা বুঝতে পারছেন গেমপ্ল্যানটা?'
সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে, রাজ্যের প্রায় ৬০ জনের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এই নিয়ে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক তরজা। এর আগে বীরভূমের সিউড়ির সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেও এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ জানানোর জন্য মুখ্যসচিবকে একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরির নির্দেশও দেন।