গ্রেফতারের পরও দাপট কমেনি জয়ন্ত সিংহের। বরং তাঁর চেহারায় সেই বেপরোয়া ভাব স্পষ্ট। শুক্রবার আড়িয়াদহের সেই তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে জয়ন্তকে চেনা ভঙ্গিমায় দেখা গেল। পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের ধাক্কা দিলেন এলাকার 'জায়ান্ট' নামে পরিচিত জয়ন্ত। চোখেমুখে বেপরোয়া ভাব স্পষ্ট।
আড়িয়াদহের তালতলা ক্লাবে মারধরের ঘটনা ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ক্লাবে এক জনকে চ্যাংদোলা করে মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in। আড়িয়াদহে মারধরের ঘটনার মূল পাণ্ডা জয়ন্ত সিংকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জয়ন্তের নানা কীর্তির কথা খবরে আসছে। এমন আবহে শুক্রবার তালতলা ক্লাবে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাতে জয়ন্তকে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে বেরোনের সময় পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের ধাক্কা দিতে দেখা যায় জয়ন্তকে। পরনে কালো রঙের টি-শার্ট। চোখেমুখে সেই ঔদ্ধত্য ভাব। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় এভাবেই দেখা গেল জয়ন্তকে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেজাজ হারিয়ে ধাক্কা দেন জয়ন্ত। মারধর করেছিলেন কেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, জয়ন্ত বলেন, 'আমাকে কি দেখেছিলেন? যে ছিল, সে শাস্তি পাবে।' কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে জয়ন্ত বলেন, 'না, কোনও যোগ নেই।'
জয়ন্ত প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাদ্যায় বলেন, 'অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংকে বার বার গ্রেফতার করা হয়েছে। ৫টি মামলায় ৫ বার গ্রেফতার হয়েছেন ২০১৬ সাল থেকে। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, জয়ন্ত পুরনো গুন্ডা।'
সাংবাদিক বৈঠকে আলাপনের পাশে ছিলেন রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা। তিনি বলেন, পরিস্থিতি একটু এদিক-ওদিক হতে দেখলেই কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা ভাঙলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। জয়ন্তের গ্যাংয়ের একের পর এক অত্যাচারের ভিডিয়ো গত কয়েক দিনে প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ওই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in। এক কিশোরের যৌনাঙ্গে সাঁড়াশি দিয়ে চেপে অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনায় জয়ন্তের শাগরেদ প্রসেন ওরফে লাল্টুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লাল্টুকে গ্রেফতার করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, কোনও একটি চুরির ঘটনায় এক কিশোরকে ক্লাবে তুলে নিয়ে এলে তার গোপনাঙ্গে সাঁড়াশি দিয়ে চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
জয়ন্ত কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের 'ঘনিষ্ঠ' বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও এই একথা অস্বীকার করেছেন মদন। বরং এই ঘটনায় প্রকাশ্যে মুখ খোলায় প্রাণনাশের আশঙ্কা করেছেন তিনি। জয়ন্তকে না ছাড়ালে গুলি করা হবে বলে এমন হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। বর্ষীয়ান সাংসদ অভিযোগ করেছেন যে, তাঁকে ফোন করে বাংলা এবং হিন্দিতে গালিগালাজ করা হয়। বলা হয় যে, 'জয়ন্ত সিংরে ছাড়ানো না হলে তোকে গুলি করব!' হুমকি ফোন পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন মদনও।