বিজেপির (BJP) অভ্যন্তরীণ বিড়ম্বনা যেন কিছুতেই মিটছে না। এবার দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পাশাপাশি দলের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিলেন বিজেপির দার্জিলিং জেলার পর্যবেক্ষক সম্রাট দে। মঙ্গলবার ইমেল মারফত দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে বিজেপি ছাড়লেও এখনই অন্যকোনও দলে যোগ দিচ্ছেন না বলেও এদিন জানিয়েদেন সম্রাটবাবু।
বিধানসভা নির্বাচনে দলের পরাজয়ের জন্য এদিন নাম না করে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র (Kailash Vijayvargiya) দিকে আঙুল তোলেন সম্রাট দে। দার্জিলিং জেলার এই পর্যবেক্ষকের বলেন, "ইন্দোর থেকে আসা এক নেতা টাকার বিনিময়ে বিধানসভা ভোটের টিকিট বিলি করেছেন। সেই কারণেই দলের ভরাডুবি হয়েছে। বিজেপি তার নীতি আদর্শ থেকে সরে গিয়েছে। দলের সঙ্গে নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। তাই দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও ইস্তাফা দিচ্ছি।"
প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ার জেলার রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত সম্রাট দে (Samrat Dey)। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারের বিজেপি পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। এমনকী সেই সময় কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী তথা বর্তমান সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের ভোট ম্যানেজার সম্রাটবাবু। আর শুধু তাই নয়, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও যথেষ্ট যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপূর্ব ভারতে যাওয়ার সময় বেশকয়েকবার আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় বায়ুসেনার ছাউনিতে অবতরণ করেছেন। সেইসময়ও সেখানে দেখা গিয়েছে সম্রাট দে-কে। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর সভাতেও প্রথম সারিতে থাকতেন তিনি। এহেন বিজেপি নেতার দল ছাড়ার ঘোষণায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে।
বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কিছুদিন পর থেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে (TMC) যোগদানের পালা শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় প্রতিদিনই দলে দলে তৃণমূলে নাম লেখাচ্ছেন বিজেপির নেতা কর্মী সমর্থকেরা। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাও হাতে তুলে নিয়েছেন ঘাসফুলের পতাকা। আর ঠিক তারপরেই দল ছাড়ার ঘোষণা সম্রাট দে-র। এক্ষেত্রে দলের একের পর এক শীর্ষ নেতার এই ধরনের সিদ্ধান্ত বিজেপি নেতৃত্বের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল।