এই তো কদিন আগেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী তাঁর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কার্যত দু'ধরনের মতামত শোনায় রাজ্য বিজেপির অন্দরেও। এবার সেই জন বার্লাকেই (John Barla) কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কেন্দ্রের সংখ্যালঘু মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) সাংসদ। এদিকে জনকে মন্ত্রী করার পরেই কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, হঠাৎ করে তাঁকে কেন বেছে নিল কেন্দ্র?
এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কারও কারও মতে, সাম্প্রতিককালে জন বার্লা যেভাবে উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছিলেন, সেটা খুব একটা ভালভাবে নেননি সমাজের একটা বড় অংশের মানুষ। এমনকী উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যেই এই নিয়ে দ্বিমত তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি বিজেপি বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছিল তৃণমূলও। সেক্ষেত্রে বিষয়টা নিয়ে আরও জলঘোলা হলে তা জনমানসে খারাপ প্রভাব ফেলত পারত বলেই হয়ত মনে করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। আর বাস্তবেই তেমনটা হলে আগামী নির্বাচনগুলিতে তার প্রভাব পড়ত ভোটবাক্সে। সেই কারণেই হয়ত ঝুঁকি এড়াতে আপাতত জনকে মন্ত্রী করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
আর শুধু এটাই নয়, জন বার্লার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য বিজেপির মধ্যে যে মত পার্থক্য তৈরি হয়েছিল, তারও সমাধান সূত্র হয়ত খুঁজে বের করার চেষ্টা করল গেরুয়া শিবির। কারণ জন উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানানর পরেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব তা সরাসরি খারিজ করে দেন। সেক্ষেত্রে দলের মধ্যে এমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সরাসরিই জানিয়েদেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীদের মতো নেতারা। অন্যদিকে আবার উত্তরবঙ্গের কয়েকজন বিজেপি নেতানেত্রী জনের দাবিকে সমর্থন জানান। যার জেরে দলের অন্দরের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে চলে আসে, যা আগামিদিনে বিজেপির মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠতে পারত। তাই জনকে মন্ত্রী করে হয়ত সেই সমস্যাটিও মেটানোর চেষ্টা করলেন মোদী-শাহ-নাড্ডারা। অর্থাৎ আলিপুরদুয়ারের সাংসদকে মন্ত্রী করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করলেন বলেই মত রাজনৈতিকমহলের একাশের।