প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোকাহত হাওড়ার আন্দুলের আরগড়ির কোলে পরিবার। ছাত্র সংঘর্ষে স্বপন কোলের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এই পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তাঁর আন্তরিক সহানুভূতি ও সহায়তায় সেই সময় পরিবারটি চরম দুর্দশার মধ্যে থেকেও কিছুটা সান্ত্বনা পেয়েছিল।
২০১০ সালের ১৫ই ডিসেম্বর, আন্দুলের প্রভু জগদবন্ধু কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে এসএফআই ও তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। সেই সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন এসএফআই কর্মী ও ছাত্র নেতা স্বপন কোলে। পরদিন হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার ফলে রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
এরপর ২০১১ সালের ২রা জানুয়ারি, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্বপন কোলের বাড়িতে আসেন। দরিদ্র পরিবারটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তিনি তাপস কোলেকে বিধানসভায় চাকরির ব্যবস্থা করেন এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই মানবিকতা ও সহানুভূতি আজও ভোলেনি কোলে পরিবার।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে কোল পরিবারের সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। স্বপন কোলের মা বলেছেন, "খবরটা শুনে ভীষণ কষ্ট লাগছে। ছোটো ছেলের মৃত্যুর পর বুদ্ধ বাবু আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। বড় ছেলে তাপসকে বিধানসভায় চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। দোষীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।"
তাপস কোলে বলেন, "তখন আমাদের পরিবার খুবই দুর্দশার মধ্যে ছিল। বুদ্ধ বাবু না থাকলে আমরা ভেসে যেতাম। তাই তার মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।"
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর সহানুভূতি ও সহানুভূতিশীল আচরণ অনেক সাধারণ মানুষের মনে চিরস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে। কোলে পরিবারের মতো অনেকেই তাঁর অকাল প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।