দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হলেন দার্জিলিংয়ের বীরপুত্র ব্রিজেশ থাপা। সোমবার জম্মুর ডোডা জেলার দেশা জঙ্গলে তল্লাশি অভিযানের সময় এই ঘটনা ঘটে। ব্রিজেশের শহিদ হওয়ার খবর মঙ্গলবার সকালে দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের বড়াগিঙ্গের বাড়িতে পৌঁছায়। ব্রিজেশের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।
সেনাবাহিনীর স্বপ্ন পূরণ:
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছোট থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বড় হয়েছিলেন ব্রিজেশ। বাবা ভুবনেশ থাপাও সেনাবাহিনীতে কর্নেল ছিলেন। সেই চাকরির সূত্রে ছোটবেলা থেকেই ব্রিজেশের মনে ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন। পাঁচ বছর আগে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় তাঁর।
জঙ্গলে লড়াই:
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় জম্মুর ডোডা জেলার দেশা জঙ্গল এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। ব্রিজেশ ছিলেন সেই অভিযানের নেতৃত্বে।
অতর্কিতে সেনাবাহিনীর দিকে ধেয়ে আসে জঙ্গিরা। শুরু হয় দু'পক্ষের গুলির লড়াই। ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা এই লড়াইয়ে গুরুতর যখম হন ব্রিজেশ-সহ আরও তিন জন সেনাকর্মী। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁদের। কিন্তু আঘাত অত্যন্ত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের বাঁচানো যায়নি।
গর্বিত বাবা:
ছেলের মৃত্যুতে কষ্ট পেলেও, ব্রিজেশের বাবা ভুবনেশ জানান, তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। 'আমার সন্তান দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হয়েছে,'- বলছেন তিনি।
মা ছাড়াও ব্রিজেশের এক দিদি রয়েছেন।
স্কুল ও কলেজ জীবন:
দার্জিলিংয়ের লেবংয়ে প্রাথমিকের পড়াশোনা করেন ব্রিজেশ। তারপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাবার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে হলেও স্কুল ও কলেজের পড়াশোনা অব্যাহত রাখেন। মুম্বইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি-টেক শেষ করে কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস পরীক্ষায়(CDS) বসেন। ২০১৮ সালে পরীক্ষায় পাশ করেন। ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১০ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে মোতায়েন ছিলেন ব্রিজেশ
এরপর তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা সেনা ছাউনিতে বদলি করা হয়। বুধবার ব্রিজেশের দেহ বিশেষ বিমানে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হবে। এরপর তাঁকে বাগডোগরা সেনা ছাউনিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা জানানো হবে। সেখান থেকে তাঁর দেহ সড়কপথে আনা হবে।