বাংলাদেশ জলসীমায় আটক পশ্চিমবঙ্গের ৯৫ জন মৎস্যজীবীর দ্রুত মুক্তি এবং দেশে ফেরার ব্যাপারে উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাকদ্বীপের স্থানীয় বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পরিবারগুলিকে আশ্বস্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে এখন আশার আলো দেখছে উদ্বিগ্ন পরিবারগুলো।
ঘটনার পটভূমি
গত অক্টোবর মাসে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় বঙ্গোপসাগরে টহল দিচ্ছিল বাংলাদেশের নৌবাহিনী। তাদের রাডারে ধরা পড়ে কাকদ্বীপের দুটি ভারতীয় ট্রলার। বাংলাদেশের দাবি, ট্রলার দুটি বেআইনিভাবে জলসীমা লঙ্ঘন করে ইলিশ ধরছিল। এরপর ওই ট্রলার দুটি আটক করে ৯৬ জন মৎস্যজীবীকে পটুয়াখালি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় একজন মৎস্যজীবী প্রাণ বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন। তাঁর জন্য ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরে আটক ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশের কলাপাড়া থানায় স্থানান্তরিত করা হয়। একই সময় ভারতীয় জলসীমাতেও প্রায় ৯০ জন মৎস্যজীবী আটকে পড়েন।
মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপ
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, "এটি আন্তর্জাতিক বিষয়, যা কেন্দ্রের অধীনে।" তবে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিশেষ সাড়া না পাওয়ায় এবার নিজেই সক্রিয় হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী প্রথমে কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজ নেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ফোন করে পরিবারের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে জানতে চান। তিনি আশ্বস্ত করেন, মৎস্যজীবীদের মুক্তির ব্যবস্থা দ্রুত করা হচ্ছে। এদিন তিনি মন্টুরামকে বলেন পরিবারগুলিকে জানিয়ে দাও, 'কাল-পরশুর মধ্যে ফিরে আসবে।'
পরিবারগুলির প্রতিক্রিয়া
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে মৎস্যজীবীদের পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তাঁরা এখন আত্মীয়দের ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাও তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মুক্তির প্রক্রিয়া
মৎস্যজীবীদের মুক্তি ও দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবারও আবেদন জানিয়েছেন। কূটনৈতিক স্তরে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় উদ্যোগে পরিবারগুলির মধ্যে নতুন করে আশা জেগেছে।