গার্ডেনরিচে দুর্ঘটনাস্থলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথায় চোট থাকায় সাদা ব্যান্ডেজ ও মাথায় কালো ওড়না জড়িয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আহত মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে দেখা যায় সাংসদ মালা রায় ও দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুকে। উপস্থিত হন পুলিশ কমিশনার বীনিত গোয়েলও। মুখ্যমন্ত্রী দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশের তরফে ব্যারিকেড করা হয়। দুর্ঘটনাস্থলের সরু গলিতে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
মমতা বলেন, "আপনারা জানেন খুব ঘিঞ্জি এলাকা। বছরের পর বছর ধরে এই এলাকা তৈরি হয়েছে। এটি আজ তৈরি হয়েছে তা নয়। এমন কিছু বাড়ি তৈরি করে একাংশ প্রোমোটারেরা। তারা বাড়ি তৈরি করার আগে ভাববেন আশেপাশের গরিব মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়। শুধু ৬ তলা বাড়ি তৈরি করে দিলাম তা নয়। বাড়িটা যাতে মজবুত হয়, সেটার স্বীকৃতি আছে কিনা দেখা দরকার। আমি শোকস্তব্ধ পরিবারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। বাড়িটা সরকারি অনুমতি পেয়েছে কিনা মেয়রকে জিগ্গেস করলাম, ও বলল অফিসিয়াল পারমিশন পায়নি। এরকম কিছু কিছু বেআইনি বাড়ি নির্মাণ হয়। রমজান মাস চলছে। এই এলাকায় সকলে উপবাস করেন। তাও তারা উদ্ধারকাজ করছেন। ২ জন মারা গেছে, একজনের পা আটকে, বেঁচে আছেন। উদ্ধারকাজ যত তাড়াতাড়ি হবে ভাল। এখানে স্বাস্থ্য, অগ্নি, দমকল বিভাগ, পুলিশ সবাই আছে। বেআইনি কাজ করে থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সরকার এদের পাশে আছে। যাদের বাড়িঘর ভেঙেছে তা কমিশনারেট দেখে নেবে। বেআইনি কাজের জন্য যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। জায়গাগুলি খুবই ঘিঞ্জি। পুলিশের তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে যা এসেছে বললাম। বাকি তদন্ত করে বলা হবে।"
এরপর আহতদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বলেন, "কিছুটা সময় লাগবে। যাঁরা হাসপাতালে আছেন তাঁরা স্থিতিশীল।"
সোমবার গার্ডেনরিচে মধ্যরাতে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ বহুতল। তলায় চাপা পড়ে বস্তিবাসী। সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ২ জন মৃত বলে জানা যায়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন ৭ জন। আহত প্রায় ১৫। এদিন ঝুপড়ির ওপর ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ বহুতল। মাঝরাতে গার্ডেনরিচ থানা অন্তর্গত ফতেপুর এলাকায় তাঁতিপাড়ায় তখন রাত ১২টা। ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বেশিরভাগ ঝুপড়িবাসী। জলাভূমি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ বলে দাবি করেন এলাকাবাসীরা।