কলকাতা গার্ডেনরিচ মধ্যরাতে ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ বহুতল। তলায় চাপা পড়ল বস্তিবাসী। সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ২ জন মৃত বলে জানা যায়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন ৭ জন। আহত প্রায় ১৫। এদিন ঝুপড়ির ওপর ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ বহুতল। সোমবার মাঝরাতে গার্ডেনরিচ থানা অন্তর্গত ফতেপুর এলাকায় তাঁতিপাড়ায় তখন রাত ১২টা। ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বেশিরভাগ ঝুপড়িবাসী। জলাভূমি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ বলে দাবি করেন এলাকাবাসীরা।
সোমবার সকালে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমি ও সুজিত সারা রাত ছিলাম। তাও দুটো মানুষকে বাঁচাতে পারলাম না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। বেআইনিভাবে বহুতলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রায় ২১ জন মানুষ চাপা পড়েছিল। এখনও পর্যন্ত ২ জন মৃত। ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা চিকিৎসাধীন। যারা চাপা পড়েছেন তারা একেবারে গরিব মানুষ, টালির চালে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা ও আহতদের পরিবার পিছু ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে কিনা কাউন্সিলরের দেখার দায়িত্ব নয়, আধিকারিকের। আমি এত সুবিধা করে দিয়েছি তাও কেন এত বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে জানি না। সিপিএমের আমল থেকে ট্রেন্ড চলে আসছে। প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। প্রোমোটারকে গ্রেফতার করা হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে।"
এদিন মধ্যরাতে বিকট শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। এলাকার মানুষ তখনও ঠাহর করতে পারেনি, কী হয়েছে। সকলে ভাবেন ভূমিকম্প হয়েছে। তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেখতে পান গোটা এলাকা ধুলো ধোঁয়ায় ঢেকেছে।
যে সময় নতুন নির্মীয়মান বহুতলটি ভেঙে পড়েছে তার তলায় চাপা পড়েন বেশ কিছু বস্তিবাসী। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। বড় বড় সিমেন্টের চাঁই, লোহার রড, বালি থাকায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হয়। এরপর ঘটনাস্থলে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ খবর পেয়ে ছুটে আসেন। পুলিশ ও দমকলের আধিকারিক সহ কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, ফিরাদ হাকিম ও বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ এসে পৌঁছন।
স্থানীয়রা জানান, এই বহুতলের একদম নীচের তলায় বেশ কিছু মানুষ থাকতে শুরু করেছিলেন। তারাও চাপা পড়েছেন বলে জানা যায়। এই ঘটনার জেরে গোটা এলাকা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পড়ে। দমকল সিভিল ডিফেন্সের ও ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের আধিকারিকরা উদ্ধার কাজে হাত লাগান। কিন্তু যেভাবে বহুতল ভেঙে পড়ে তাতে উদ্ধারকাজ চালাতে খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। একেবারে সংকীর্ণ রাস্তায় শুরু যেখানে কোনও গাড়ি ঢুকতে পারেনি। পরে এনডিআরএফের তরফে সাহায্য নিয়ে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত অবস্থায় যাদের নিয়ে আসা হয়েছে তাদের চিকিৎসা চলছে।