চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ভারতে। সফরের দ্বিতীয় দিনে অর্থার আজ হায়দরাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার শীর্ষ পযায়ের বৈঠক ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। গার্ড অব অনারের মধ্য দিয়ে এদিন শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন মোদী । তার আগেই অবশ্য এপার বাংলার মানুষকে সেরা উপহার দিয়ে দিলেন শেখ হাসিনা। তাঁর ভারত সফরের প্রথমদিনই পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছল পদ্মার ইলিশ।
দুর্গাপুজো উপলক্ষে দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির প্রথম চালানে দুই ট্রাকে আট মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠাল বাংলাদেশ। সোমবার সন্ধ্যায় কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ইলিশের ট্রাক প্রবেশ করে। প্রসঙ্গত হাসিনার ভারত সফরের একদিন আগেই রবিবার ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ রফতানি করতে পারবে। সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম চালানে ৮ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রফতানি হয়েছে
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানটি হল বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ। আর ভারতের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নাম এস আর ইন্টারন্যাশনাল। প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ১০ মার্কিন ডলারে রফতানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের পরিদর্শক মাহাবুব রহমান। তিনি আরও জানান, পর্যায়ক্রমে বাকি ইলিশ রফতানি করা হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ইলিশ রফতানি করা হবে।
গতবছর দুর্গাপুজোর সময়েও ১১৫ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ভারতে চার হাজার ৬০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। সোমবার সন্ধ্যায় বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পেটি বোঝাই ইলিশ মাছ এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ মঙ্গলের সকালেই বাজারে বাজারে চোখ ধাঁধানো ইলিশের পসরা নজরে আসার অপেক্ষা। এবার মোট ৪৯টি লাইসেন্সের আবেদন করা হয়েছে। প্রতি লাইসেন্স পিছু ৫০ টন ইলিশ বরাদ্দ হয়েছে। সেইমতে ২৪৫০ টনের কাছাকাছি ইলিশ আসবে। জানা যাচ্ছে মঙ্গলবারও আরও লাইসেন্স বেরোবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব মাছ রফতানি করতে হবে। ফলত আশা করা হচ্ছে, আগামী ২-৩দিনের মধ্যে রাজ্যের বাজারগুলিতে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাবে।
২০২০ সালে দুই দফায় ভারতে ১ হাজার ৮৫০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। আর গত বছর ১১৫ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই দফায় ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়। যদিও অনুমোদন পাওয়া সব মাছ রফতানি হয়নি। বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রফতানিকারক সমিতির (বিএফএফইএ) সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়। তা থেকে ৪-৫ হাজার টন ইলিশ রফতানি হয়। এ কারণে স্থানীয় বাজারে দাম ও সরবরাহে খুব একটা প্রভাব পড়ে না। অন্যদিকে, ২০০ কোটি টাকার সমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। বাংলাদেশ থেকে ভারতে সাধারণত ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বেশি রফতানি হয়ে থাকে।