সঞ্জয় রায় নাকি 'দাবার বোড়ে'। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয়কে তোলা হলে বিস্ফোরক দাবি করে সঞ্জয়। আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সে একা দোষী নয়, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র আছে বলে দাবি করছে।সঞ্জয়ের দাবি, তাকে ফাসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে, নিজের ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। তারপরই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, 'আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম, এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।' তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী RG করের ঘটনার পর মন্তব্য করেছিলেন যে, সকাল থেকে তিনি মনিটর করছিলেন। সারারাত ঘুমাতে পারেননি। কী মনিটর করেছেন? কীভাবে দেহ লোপাট করা যায়? CBI-র তদন্তে এগুলো আসা উচিত।'
সোমবার শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয় দাবি করে, তার কোনও কথাই নাকি শোনা হয়নি। তার নিজের ডিপার্টমেন্টই নাকি তাকে ফাঁসিয়েছে।'
এর পরপরই প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তারদের মুখ কিঞ্জল নন্দ প্রশ্ন তোলেন, 'সঞ্জয় কি সত্যিই দাবার বোড়ে?' এর পাশাপাশি CBI-র সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তার।
সোমবার আরজি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে শিয়ালদহ আদালতে তোলার পর ডাক্তার কিঞ্জল নন্দকে বলেন, 'আমরা আন্দোলনকারী, আমরা তদন্তকারী দল নই। আমরা শুরু থেকেই বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়েছি। CBI-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সঞ্জয় রায় ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই ঘটনা একজনের পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয়। CBI কেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না? CBI-এর চার্জশিটে সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারও নাম নেই কেন? এটা সাধারণ মানুষকে ভাবাচ্ছে। সঞ্জয় রায় বললেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁকে কে ফাঁসিয়েছে, এটা CBI-র সামনে আনা উচিৎ। CBI তদন্ত দ্রুত করুক, নির্যাতিতা বিচার পাক। আমরা শুধু বিচার নয়, ন্যায়বিচারের দাবি করছি।'
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর কাণ্ডের শুনানি রয়েছে। তার আগে সোমবার শিয়ালদহ আদালতে এই মামলার চার্জ গঠন হয়েছে। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, চার্জ গঠন হলেও এখনও তদন্ত চলছে। CBI-র তরফে আইনজীবী জানান, 'তদন্ত চলছে। আমরা আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে চাইছি।'
সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী জানান, 'জামিনের আবেদন করছি। প্রথম চার্জশিটে শুধুই অত্যাচার ও শেষ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন প্রমাণ লোপাটের কথা বলছে। একটা প্রমাণ দেখাক।'
পাল্টা CBI-র আইনজীবী বলেন, 'আমরা কিছু প্রমাণ পেয়েছি, যার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এই দু'জন একে অপরের সঙ্গে ঘটনার পর যোগাযোগে ছিলেন। কেন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল সেটার তদন্ত চলছে। চার্জশিটে আমরা বলিনি সঞ্জয় একাই যুক্ত। সঞ্জয়ের বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স পাওয়া গিয়েছে। তাই ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতা মেনে ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র ছিল কিনা তার তদন্ত করা হচ্ছে। এখনই সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মন্ডলকে ক্লিনচিট দিচ্ছে না CBI।'
দু'পক্ষের সাওয়াল-জবাব শেষে সন্দীপ ঘোষের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয় আদালত। সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে ফের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক।
সংবাদদাতা- মানস নস্কর