গত বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের। তারপর থেকেই এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল রাজ্যের শিক্ষামহল। এই ঘটনায় বুধবার নদিয়ায় মৃত ছাত্রের বাড়িতে গেলেন তৃণমূল প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবারই নিহত ছাত্রের বাড়ি যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো, বুধবার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী এবং এক সাংসদ। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেখা করেন যাদবপুরে মৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।
এদিন নদিয়ায় যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বারাসতের সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদারও। প্রতিনিধি দলের অংশ হন যুব তৃণমূলের রাজ্য় সভানেত্রী সায়নী ঘোষও। পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তৃণমূলের প্রতিনিধিরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন। বিচার অবশ্যই হবে।
নদিয়ার বগুলায় মৃতের মায়ের সঙ্গে দেখা করে ব্রাত্য বসুরা জানান ওই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চলছে। ব্রাত্য বসুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন। ছেলের মৃত্যুর বিচার পাবেনই।’’ মৃতের মাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন সায়নী ঘোষ। মৃতের মা কাঁদতে কাদতে বলেন, ‘‘যাদবপুরে পড়তে চাইত ছেলে। বলত, ওখানে ভর্তি করাবে তো মা?’’ এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নিজে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোষীদের কেউ ছাড় পাবেন না।’’ পাশাপাশি ওই বাড়ির ছোট ছেলের পড়াশোনার বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। মৃতের মাকে ব্রাত্য বসু ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘আতঙ্ক করতে হবে না। আপনার ছোট ছেলেকে কলকাতায় পড়াবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওকে দেখবেন।’
সায়নী ঘোষ ও ব্রাত্য বসুর দাবি করেন, ‘আজও সকালে ৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। এটা একটা গ্যাংয়ের কাজ। কারও একার কাজ নয়। আজও সকালে ৬ জন গ্রেফতার হয়েছে।’ সায়নী ঘোষ মৃতের মাকে আশ্বাস দেন, ‘এখানে সারাক্ষণ চিকিৎসক ও সহকারী থাকবে আপনাদের অসুবিধা হবে না। আমরা দল থেকে ব্যবস্থা করে দেব।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন এই ঘটনায়। ছাত্রের মাকে জানান কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বলেন, ‘উনি আমাদের পাঠিয়েছেন আপনাদের কাছে।’
এদিকে যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় অব্যাহত ধরপাকড়। সৌরভ-দীপশেখর-মনোতোষের পর গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ছ’জনকে । রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর পাকড়াও করা হয়েছে এদেরকে। নজরে রয়েছে আরও অনেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মহম্মদ আরিফ (১৮)। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, মহম্মদ আশিফ আফজল আনসারি (২২), তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া। গ্রেফতার হয়েছে অঙ্কন সরকার (২০), তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন অসিত সর্দার নামে একজন প্রাক্তন পড়ুয়া, রয়েছেন সুমন নস্কর ও সপ্তক ক্যামিলা নামের প্রাক্তন পড়ুয়াও।