কাঁটাপুকুর মর্গ থেকে কল্যাণীতে নিয়ে যাওয়া হল জয়নগরের নাবালিকার দেহ। রবিবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, কল্যাণীতে নাবালিকার ময়নাতদন্ত করতে হবে। সেই অনুযায়ী, মোমিনপুরের কাঁটাপুকুর মর্গ থেকে সোমবার সকালে দেহ নিয়ে গাড়ি রওনা দেয় কল্যাণীর উদ্দেশে। কল্যাণীতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর দেহ নিয়ে আসা হবে জয়নগরে। সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিকে ঘটনার ২ দিন কেটে গেলেও এখনও থমথমে জয়নগর। সেখানে এলাকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি জনজীবন। রবিবার জয়নগরের মহিষমারি বাজার কার্যত জনমানব শূন্য ছিল। সোমবার সকালে কিছু দোকানপাট খোলা দেখা যায়। বাজারেও টহল দিচ্ছ পুলিশ। কল্যাণী এইমস থেকে দেহ আনার পর যাতে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ায় সেজন্য সতর্ক পুলিশ। ঘন ঘন টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়িও।
প্রসঙ্গত, রবিবারই জয়নগরের নাবালিকার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। শুনানিতে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়ে। কেন পুলিশ পকসো আইনের ধারা যোগ করেনি, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। স্থানীয় বাসিন্দা ও শিশুর পরিবারের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় কোনও হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত করা হোক। সেই মোতাবেক কল্যাণীতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে মহিষমারিতে পড়তে গিয়েছিল ক্লাস ফোরের এক ছাত্রী। তারপর আর সে বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে নাবালিকাকে। রাতে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি পুকুর থেকে নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এদিকে সিসিটিভি দেখে শনিবার ভোররাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরিবারের দাবি, তাঁরা প্রথমে অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। স্থানীয় ফাঁড়ির তরফে বলা হয়, থানায় যেতে। যদি সেই সময় গুরুত্ব দেওয়া হত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। নাবালিকাকে বাঁচানো যেত। গ্রামবাসীর এও অভিযোগ, স্থানীয় একটি দোকানে সিসিটিভি ছিল। পুলিশ আগে থেকে তৎপর হয়ে যদি সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখত তাহলে আগেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করা যেত। কিন্তু পুলিশ সেই সময় কোনও পদক্ষেপ করেনি।
ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফাঁড়িও ভাঙচুর চালানো হয়। তারপর থেকেই এলাকায় মোতায়েন বাড়তি পুলিশ।