Kharagpur TMC Youth Leader: এবার বিরোধীদের জুতোপেটা নিদান তৃণমূল যুব নেতার। এমনই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। শাসকদল ওই নেতাকে সতর্ক করে দিয়েছে। খড়্গপুরের ঘটনায় চাঞ্চল্য।
অন্য কেউ প্রচারে এলে
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোন দল ভোট চাইতে গেলে জুতো মারার নিদান দিলেন তৃণমূল নেতা। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার খড়্গপুর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় এই মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি 'আজতক বাংলা'।
ছিল কর্মী সম্মেলন
খড়গপুর দু'নম্বর ব্লকের পপরআড়া ৬/১ অঞ্চল বলরামপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলন ছিল শনিবার। সেই মঞ্চেই বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় এ রকমই নিদান দেন।
প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য, কোনও দল বা বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট চাইতে যায়, তাহলে তাদের সাদরে আমন্ত্রণ করবেন। কিন্তু থালায় জুতো সাজিয়ে জুতো মারবেন। আর জিজ্ঞাসা করবেন, তারা এতদিন কোথায় ছিল।
যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। এ নিয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা কাশীনাথ বসু জানান, গণতান্ত্রিক ভারত দেশে রাজনিতী করার অধিকার সবার আছে। উনি যেই মন্তব্য করেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।
যা যা বলেছিলেন
বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় সভায় বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের জন্য কী করেছে, না করেছে, সব জানেন। সারা দিন তিনি বাংলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনারা জানেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ধরনের নেত্রী। সোনার বাংলা হলে সোনার ভারত নয় কেন, সবাই এখন এই কথা বলেন। আমরা গর্ববোধ করি আমরা বাংলার মানুষ, আমাদের নেত্রী মমতা।"
তিনি বলেন, "দেখবেন কিছু মানুষ আছেন, সারা বছর আপনাদের পাশে নেই। সুখে-দুঃখে নেই। আমাদের নেতা-কর্মীরা সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করেন। আমাদের কাছে এলে কেউ খালি হাতে ফিরে আসে না। সিপিআইএম-এর সঙ্গে বিজেপি সমঝোতা হবে। আপনাদের সচেতন থাকতে হবে।"
এরপরই তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন। বলেন, "আপনাদের একটা জিনিস করতে হবে। কেউ প্রচারে এলে, সিপিআইএম, বিজেপি যে হোক, আমি আপনাদের অনুরোধ করব, একটা থালায় প্রদীপ জ্বালিয়ে গ্রহণ করবেন, এলেই। থালার ওপরে একটা জুতো রাখবেন। আসা মাত্রই যেই ভোটের কথা বলবে, ঠাঁই ঠাঁই করে মারবেন। আর জানতে চাইবেন, এত বছর কোথায় ছিলিস? আমাদের বিপদ আপদে এসেছিল। আসিসনি"
পাশে নেই দল
জেলা তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি বলেন, "আজ শুনেছি। এতটুকু বলতে পারি যদি সত্য হয়, ঠিক বলেনি। পার্টি অনুমোদন করে না। তবে বিজেপি নেতারা যে ভাষায় কথা বলেন, তাতে ওদের উল্লাসিত হওয়ার কথা নয়। আমি দলের ওই নেতাকে সতর্ক করে দিয়েছি। বলে দিয়েছি, আবার বললে দল অ্যালাউ করবেন না। দুঃখপ্রকাশ করেছে।"
সমালোচনায় বিজেপি
বিজেপি ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সদস্য কাশীনাথ বসু বলেন, "তৃণমূলের কাছে রাজনীতির সংজ্ঞা পশ্চিমবঙ্গকে বিরোধীশূন্য করা। গত পঞ্চায়েত ভোটে আমরা দেখেছিলাম। আর একটা পঞ্চায়েত ভোট আসছে। এটা হুঙ্কার।"
তিনি আরও বলেন, "অত্যন্ত নিন্দনীয়। তৃণমূলের বোঝা উচিত সব দলের অধিকার রয়েছে ভোট চাওয়ার। বাম জামানার অবসান ঘটেছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের সরিয়েছে। এমন কথা কখনই বলা ঠিক নয়। দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাব।"