Kolkata Bus Minibus Service: জ্বালানির দাম বাড়লে অটোচালকরা ভাড়া বাড়িয়ে নেন বলে অভিযোগ। তখন তাঁরা নিজের নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেন। কারও কোনও তোয়াক্কা করেন না। ট্যাক্সির ক্ষেত্রে সরাসরি তেমন না হলেও তাঁরা যাত্রী তোলেন নিজের মর্জি মতো। যাত্রী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ বারবার ওঠে।
তবে বাসের ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। বলছেন মালিকরা। তাঁদের দাবি, ভাড়া বাড়ানোর এক্তিয়ার তাদের নেই। তার জন্য ভরসা করতে হয় সরকারের ওপর। আর তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক দেরি হয়। জ্বালানির দাম বাড়লেও দীর্ঘদিন বাড়ে না ভাড়া। ফলে লোকসানে চলত হয় তাঁদের।
বাসমালিকদের দাবি
কথা হচ্ছিল বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। জানাচ্ছিলেন নিজেদের কথা। কখনও ক্ষোভ, কখনও অভিমান ফুটে উঠল তাঁদের গলায়।
আরও পড়ুন : জ্বালানির জ্বালা চলছে! বাংলায় ডিজেল ১০০ পার
শনিবার ওয়েস্ট বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, "আমরা তো অনুদান নিয়ে চলছি। যাত্রীরা আমাদের অনুদান দিচ্ছেন। জ্বালানির দাম যে হারে বাড়ছে, তার প্রতিবাদও জানাব। মানুষের পকেটে টান পড়েছে। আমরাও সাধারণ মানুষ। আগামী দিন কী করে চালাব, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা দরকার। ২০২০ সালে মার্চ মাসে ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা প্রতি লিটার ছিল। এখন তা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ১০০ টাকা পার করে গিয়েছে। সরকারের কাছে অনুরোধ, ভাড়ার নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাছে ছেড়ে দিতে বলছি। তা হলে সুবিধা হবে।"
তাঁর দাবি, অটোচালকরা নিজেদের মতো করে ভাড়া করে নেন। যেন অটোওয়ালা জোর করে বাড়িয়ে নেন। তিনি বলেন, "তবে আমরা পারি না। ভাড়া বাড়িয়ে নিলেও অটোচালকরা কোনও ভাউচার দেন না। আমরা অনুদান নিলেও টিকিট দিই।"
মিনিবাস অপারেটার্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি যুগ্ম-সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, "কী বলব! এটা যেন অভিশাপ। অটো-ট্যাক্সি মিটার ছাড়া চলতে পারে। আমরা পারি না। বাসভাড়া নিয়ে দিশাহারা হয়ে আছি। কোন পথে চলব আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছি না।"
তবে বাস ভাড়া যে অলিখিত ভাবে বেড়ে রয়েছে, তা তিনি মেনে নিয়েছেন। এ ব্য়াপারে বলেন, "ভাড়া অলিখিত ভাবে বেড়ে রয়েছে। যাত্রীরাও তা দিচ্ছেন। আরও একটু বাড়ানোর দরকার। সরকার যদি সাহায্য না করে, তা হলে কী করে কী হবে, তা জানি না। সিএনজি এই গাড়িতে চলবে না। একটি ইলেকট্রিক গাড়ি ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ। এগুলির ইনসুরেন্স প্রিমিয়াম মোটামুটি ২ লক্ষ টাকার কম হবে না। অনুদান হিসবে মানুষ দিচ্ছেন। তাই এখনও পর্যন্ত রাস্তায় বাস চলছে।"
বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সুরজিৎ সাহা দাবি করেন, সরকার আমাদের ভাড়া ঠিক করে দেয়। বহু লড়াই আন্দোলন করেছি, যাতে মালিকেরা করতে পারে। তবে তা হয়নি। সরকার নির্ধারিত দামে তেল কিনছি, আর দাম সেই তুলনায় পাচ্ছি না। এ নয়ে তো ক্ষোভ রয়েছেই। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাসের সংখ্যা আরও কমবে।
রাজ্যে কত বাস-মিনিবাস
বছর খানেক আগে কলকাতায় সাড়ে ৬-৭ হাজার চলত। করোনা সংক্রণের পর পরিষেবা ফের চালু হওয়ার সময় মাঝে অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। উৎসবের সময় সাড়ে ৩ হাজার বাস চলাচল করছে।
তবে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন হাজার দুয়েক বাস চলছে। রাজ্যে বাস রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। এখন তার ৫০ শতাংশ। চলছে। কলকাতায় মিনিবাস রয়েছে এক হাজার থেকে ১,২০০। জানাচ্ছেন বাস-মিনিবাস মালিকদের সংগঠন।