রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মানহানির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছিলেন রাজ্যপাল। সেই ঘটনায় রাজ্যপালকে বারংবার নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগে, নবান্ন সভাঘরে সরকারি বৈঠকে রাজভবন নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছিলেন, 'রাজভবনে যা কীর্তিকলাপ চলছে, মেয়েরা সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আমার কাছে।' অন্য দিকে, তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনের শপথগ্রহণ নিয়ে টানাপড়েন চলেছিল। সায়ন্তিকাদের শপথ অনুষ্ঠান রাজভবনে করাতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। আর সায়ন্তিকারা চেয়েছিলেন বিধানসভায় শপথ অনুষ্ঠান হোক। এই টানাপোড়নের মধ্যেই রাজ্যপাল বনাম মুখ্যমন্ত্রী সংঘাতের সুর চড়েছিল।
মমতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছিলেন বোস। বলেছিলেন, 'সব সীমা পার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।' রাজ্যপাল আরও বলেছিলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ওঁকে সম্মান করি। কিন্তু উনি মনে করেন, যে কাউকে ধমক দেবেন...মিথ্যাচার করে কারও সম্মানহানি করার অধিকার নেই ওঁর।' এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন রাজ্যপাল বোস।
সেই মামলায় মঙ্গলবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে যে, রাজ্যপাল সম্পর্কে মর্যাদাহানিকর মন্তব্য করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এমনটাই বলেছে সিঙ্গল বেঞ্চ। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রায়াত হোসেনকে যুক্ত করা হয়েছিল এই মামলায়। তাঁদেরকেও হাইকোর্ট বলেছে, রাজ্যপাল সম্পর্কে কোনও অসম্মানজনক মন্তব্য করা যাবে না। অন্তর্বর্তী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী-সহ ওই ৪ জন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও অসম্মানজনক মন্তব্য করতে পারেবন না। হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। এই মামলায় এবার সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন মুখ্যমন্ত্রী।