তিস্তা, ফারাক্কা-চুক্তি নিয়ে আলোচনা করলেন মোদী- হাসিনা। কিন্তু তাঁকে ডাকা হল না। পুরো বিষয়টা নিয়েই তাই অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর মধ্যেই ১০টি মউ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ভারত–বাংলাদেশের মধ্যে। ফরাক্কা চুক্তির মেয়াদের নবীকরণ করা হয়েছে। এরপর বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, 'বাংলাদেশের দিকের তিস্তার জলের সংরক্ষণ এবং পরিচালন পদ্ধতির উন্নয়নের জন্য খুব শীঘ্রই টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ যাবে।'
তৃণমূলের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব সূত্রে খবর, গতকাল হাসিনা-মোদি ফারাক্কা চুক্তি পুনর্নবীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গঙ্গার জল ভাগাভাগি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা। সেটার পুনর্নবীকরণের আলোচনার সময় পশ্চিমবঙ্গকে কেন বাদ দেওয়া হল? সেই প্রশ্নেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীকে এই মর্মে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠাতে পারেন তিনি। এর পাশাপাশি আসন্ন সংসদ অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করতে পারেন তৃণমূল সাংসদরা। দলের এক উচ্চ নেতৃত্ব মারফত মিলেছে এমনই খবর। এই বিষয়ে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ইন্ডিয়া ব্লকের সঙ্গীদের নিয়ে প্রতিবাদও জানাতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের এও দাবি, ইন্ডিয়া ব্লকের সঙ্গীদের নিয়ে এই বিষয়টি সংসদে তুলতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই জন্য জোটসঙ্গীদের সঙ্গে কথা বলছে ঘাসফুল শিবির।
এর আগেও ফরাক্কা ইস্যুতে বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ফরাক্কা চুক্তি আবার বাস্তবায়িত হলে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায় বন্যা এবং ভাঙ্গনের সম্ভাবনা বাড়বে। এর ফলে বাংলার বহু গ্রামের মানুষ বিপদে পড়বেন।
শনিবারের বৈঠকে মোট দশটি চুক্তি সই হয়েছে। এর মধ্যে যেমন নতুন সমঝোতাপত্র রয়েছে, তেমনই রয়েছে পুরনো চুক্তির পুননর্বীকরণ। তালিকায় আছে ভারত-বাংলাদেশ সমুদ্র অর্থনীতি, পরিবেশ সংক্রান্ত অংশীদারি, ডিজিটাল অংশীদারি, নতুন রেল সংযোগ, সামরিক প্রশিক্ষণের মতো বিষয়। আর সেই তালিকাতেই রয়েছে ফরাক্কা চুক্তি নবীকরণ।