লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার এমনটাই জানালেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। লোকসভা ভোটে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন রফা হবে কি না, এই নিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। শুক্রবার মুর্শিদাবাদে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে 'একক লড়াইয়ের' বার্তা দিয়েছেন মমতা। জানা গিয়েছে. রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে সবকটিতেই প্রার্থী দেবে তৃণমূল। এমনকী, বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কেন্দ্রেও তৃণমূল প্রার্থী দেবেন বলে জানা যায়। এই আবহে শনিবার কুণাল জানিয়ে দিলেন, এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী। অন্য দিকে, তৃণমূলকে ফের নিশানা করে অধীর বলেছেন, 'ভোটে কী ভাবে লড়তে হয় জানি। কাউকে পরোয়া করি না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিল্লির নেতৃত্ব নেবেন।'
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে কুণাল বলেছেন, 'এই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস অযৌক্তিক দাবি করতে পারে না।' সূত্রের খবর, রাজ্যের ২টি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয়েছে জোড়াফুল শিবির। কিন্তু আরও বেশি সংখ্যক আসন চায় কংগ্রেস। আর এই নিয়েই জট তৈরি হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর এবং মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। এ বার সেই ২টি আসনই কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয়েছে তৃণমূল। তবে কংগ্রেস আরও আসনের দাবি করেছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, তৃণমূলের যুক্তি, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের ফল দেখেই ২টি আসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বিধানসভা ভোটে একটি আসনও জিততে পারেনি কংগ্রেস। তাই আসন নিয়ে তাদের 'অযৌক্তিক দাবি' মানতে নারাজ জোড়াফুল শিবির।
এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়িতে সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি অলকা লম্বা জানিয়েছেন, বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কুণালও বলেছেন, 'কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি এখন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন।' ইন্ডিয়ার নেতাদের সঙ্গে মমতা আলোচনা জারি রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন কুণাল।
তৃণমূলের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে শনিবার ফের মুখ খুলেছেন অধীর। বলেছেন, 'আমি লড়াইয়ে বিশ্বাস করি। কী ভাবে লড়তে হয় জানি। অতীতে তৃণমূল, বিজেপিকে হারিয়েছি। কাউকে পরোয়া করি না। লড়াই আমার কাছে শেষ কথা। লড়ে জিতি আমি।' এরহ পরেই তৃণমূলকে নিশানা করে বহরমপুরের সাংসদ বলেছেন, 'যাঁরা মনে করছেন, আমি কোনও ফ্যাক্টর নই। ঠিক আছে। কাউকে পরোয়া করি না।'
এর আগে, উত্তর ২৪ পরগনায় এক সভায় মমতা কার্যত একলা লড়াইয়েরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে অধীর বলেছিলেন, 'দিদি জোট চান না।' এমনকী, আসন সমঝোতা নিয়ে সনিয়া গান্ধী মমতার কাছে ভিক্ষা চাইবেন না বলেও সরব হয়েছিলেন অধীর।