তৃণমূলে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কত দিন ধরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, তা নিয়ে এ বার মন্তব্য করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, কবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার হুগলির চুঁচুড়ার সভায় কুণালের এই মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কুণাল বলেছেন, '২০৩৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতাদি। তার পর মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক।' তৃণমূলে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের মধ্যেই কুণালের এই মন্তব্য আলাদা তাৎপর্য পেল।
ঠিক কী বলেছেন কুণাল?
রবিবার কুণাল বলেছেন, 'অনেকে শকুনের মতো নজর দিচ্ছে তৃণমূলের উপর। তৃণমূলকে ক্ষতি করতে পারলে, দুর্বল করতে পারলেই পশ্চিমবঙ্গ দখল করা যাবে, যাঁরা এ কথা ভাবছেন, সে গুঁড়ে বালি।' এর পরই কুণাল বলেন, '২০৩৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক। এই সরকার থাকবে, চলবে।' তাঁর আরও সংযোজন, 'মমতাদির নেতৃত্বে, অভিষেকের সেনাপতিত্বে তৃণমূল লড়াই করবে।' বস্তুত, এর আগেও এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন কুণাল। গত বছরও তৃণমূল নেতা বলেছিলেন যে, ২০৩৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের অভাবনীয় জয়ের পর থেকেই তৃণমূলে আরও গুরুত্ব বেড়েছে অভিষেকের। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে অভিষেককে। মমতার পর অভিষেকের কাঁধেই তৃণমূলের ভার থাকবে কিনা, তা নিয়ে প্রায়ই চর্চা চলে রাজনীতির অলিন্দে। এমনকী, তার পর থেকেই তৃণমূলে আদি-নব্যের বিভাজন আলোচনায় উঠে এসেছে। অভিষেকের ছবি এবং বার্তা-সহ পোস্টারও ছেয়ে গিয়েছিল শহরে। সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের একটি কর্মসূচিতে কেন অভিষেকের ছবি রাখা হয়নি, তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন কুণাল। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে নানা মত প্রকাশ্যে এসেছে। এই নিয়ে আলোচনা চলছে রাজনীতির ময়দানে। এর মধ্যেই কুণালের এই মন্তব্য নয়া মাত্রা যোগ করল।
বিজেপিকে আক্রমণ করে কুণাল বলেছেন, 'শুভেন্দু বিজেপি, সুকান্ত বিজেপি, দিলীপ বিজেপি, এগুলো আগে ঠিক করুক ওরা।' বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেছেন, 'জ্যোতিষীর মতো কথা বলছেন...ওঁরা কখন কী বলেন জানেন না। এ সব কথার উত্তর হয় না। ২০২৬ সালেই গল্প শেষ।'