Nairobi Fly Acid Fly: উত্তরবঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এক ধরনের পোকা। সেটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এমনই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, একটু সতর্ক থাকতে হবে। তা হলে ওই পোকা থেকে মানুষের কোনও সমস্যা নেই।
আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী জানান, অতিবর্ষণে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এক ধরনের পোকার উৎপাত বেড়েছে। যার বিষাক্ত রসে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের নানা জায়গা থেকে এই রোগের রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি জানান, নাইরবি ফ্লাই নামে পরিচিত লম্বাটে এই পোকা প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার মাথা, পেটের ওপরের অংশ ও দেহের একেবারে নীচের অংশ কালো এবং বুক ও পেটের নীচের অংশ লালচে বা কমলা রঙের হয়। দৈর্ঘ্য এক সেন্টিমিটারের বেশি নয়, প্রস্থে বড়জোর এক মিলিমিটার।
সাধারণতঃ কেনিয়া, সুদানের মত আফ্রিকার পূর্ব অংশের দেশগুলোতে গুবরে জাতীয় এই পোকা দেখা যায়। বেশি বৃষ্টিপাতে জল থইথই পরিবেশে এদের বাড়বাড়ন্ত হয়। এরা রাতে তীব্র কৃত্রিম আলো, বিশেষতঃ ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্পের আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং কোনও উদ্দেশ্য ছাড়াই ওই আলোর কাছাকাছি থাকা মানুষের শরীরের অনাবৃত অংশে বসতে পারে।
আরও পড়ুন: Home Loan নেবেন? তৈরি রাখুন এই কাগজপত্র, কাজ হবে জলদি
আরও পড়ুন: গ্রাহক বন্ধ করলেও চালু থাকে Google Location Sharing? চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
আরও পড়ুন: দেশের প্রথম ইলেকট্রিক ক্রুজার বাইক এসে গেল
হুল ফোটাতে পারে না
তিনি জানান, এরা হুল ফোটাতে বা কামড়াতে পারে না। তবে চাপে বা আঘাতে এদের দেহ পিষ্ট হলে যে দেহরস বের হয়, তার মধ্যে পেডেরিন নামক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন) থাকে। এই পেডেরিন গোখরোর বিষের চেয়ে অন্তত ১৫ গুণ বেশী শক্তিশালী এবং এটি ত্বক ভেদ করে কোষের ভিতর ঢুকে গিয়ে কোষ বিভাজন বন্ধ করে দেয়।
মানুষের ত্বক এর সংস্পর্শে এলে তীব্র জ্বালা করে ও ত্বক পুড়ে গেলে যেমন ফোসকা পড়ে, সেরকম একটা ক্ষত সৃষ্টি করে। এ ধরনের ক্ষত সৃষ্টি করে বলে আফ্রিকার মানুষজন এই পোকাকে অ্যাসিড পোকাও বলে থাকেন। এই পিডেরাস ডার্মাটাইটিসের ক্ষত শরীরের অন্য কোন উন্মুক্ত স্থান স্পর্শ করলে সেখানেও একই ধরণের ক্ষত তৈরি হয়। ক্ষতস্থানে তীব্র জ্বালাপোড়ার সঙ্গে সাধারণত জ্বর, বমি-বমি ভাব, মাথাব্যথা দেখা যায়। এই টক্সিন কারও চোখে লাগলে চোখ নষ্ট হয়ে দৃষ্টিহীন হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসার উপায়
এ ব্যাপারে তিনি জানান, চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল জাতীয় বেদনানাশক ওষুধ, অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ, স্টেরয়েড লোশন কাজে দেয়। বেশি বাড়াবাড়ি হলে স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
১) মশারি টাঙিয়ে ঘুমান।
২) শোওয়ার আগে বিছানা-বালিশ ভাল করে ঝেড়ে নিন।
৩) জানালায় নেট লাগান বা সূর্যাস্তের আগেই জানালা বন্ধ করে দিন।
৪) ঘরে উজ্জ্বল সাদা আলোর বদলে কম উজ্জ্বল হলুদ রঙের আলো জ্বালান।
৫) ঘরের তাকে ন্যাপথালিন রাখুন
৬) শোওয়ার ঘরে আলো নিভিয়ে পাশের ঘরের বা বারান্দার আলো জ্বালিয়ে রাখতে পারেন।
৭) অন্ধকারে মোবাইল ফোনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
৮) বাড়ির ভিতরে ও আশেপাশে জল জমতে দেবেন না।
৯) কখনও এই পোকা গায়ে বসলে আঘাত না করে আলতো করে ঝেড়ে ফেলে দিন।
১০) যদি এই পোকা গায়ে বসে ও চাপ লেগে পিষ্ট হয়, শিগগিরি সাবান দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন।