মালদহ ও কোচবিহার সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় সাইবার প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে বড়সড় সাফল্য পেল সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ট্যাব কেলেঙ্কারি ও ডেটা পরিবর্তনের মতো একাধিক অভিযোগে এখন পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান, মালদা ও মেদিনীপুর সাইবার ক্রাইম থানার যৌথ অভিযানে ধৃতদের মধ্যে দুই অভিযুক্তের বাড়ি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মালদা সাইবার ক্রাইম থানার অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে বৈষ্ণবনগরের সেরাজুল মিয়াঁ ও কোচবিহারের মনোজিত বর্মন। মালদার সীমান্তবর্তী তিনশত দিঘী গ্রামের বাসিন্দা সেরাজুল তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভাড়া দিয়েছিল মাত্র ২ হাজার টাকার বিনিময়ে। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, ওই অ্যাকাউন্টে একটি স্কুলের ১০ হাজার টাকা জমা হয়েছিল, যা পরে আধার কার্ড ব্যবহার করে তুলে নেওয়া হয়। ওই টাকা কার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।
কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা মনোজিতকে বাংলার শিক্ষা পোর্টালের ডেটা পরিবর্তন এবং ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, মনোজিত সরকারি ট্যাবের টাকা আত্মসাৎ করার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। মালদহ সাইবার ক্রাইম থানার তরফে ১৮১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে দুটি মামলার দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি।
ধৃতদের গ্রেপ্তার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। দক্ষিণ মালদা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি অভিযোগ করেছেন, "বাংলাদেশ ও বিহার সীমান্তবর্তী এলাকায় ট্যাব প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়েছে। শাসক দলের মদতে এমন অপরাধ ঘটছে।"
বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, "সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ যে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে, তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। সীমান্ত এলাকার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর। তারা সঠিক নজরদারি করলে এসব ঘটনা এড়ানো যেত।"
এই চক্র শুধু মালদা নয়, পূর্ব বর্ধমান, মেদিনীপুর এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের অধিকাংশই সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রবিবার অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হবে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে স্থানীয় মানুষ।
সংবাদদাতাঃ মিল্টন পাল