ভোটের আগে ক্রমশ মাদক চক্রে নাম জড়িয়ে পড়ছে ভারতীয় জনতা পার্টির। বিজেপির যুব মোর্চা নেত্রী পামেলা গোস্বামীর মাদক-যোগে এবার অন্য মোড় নিল। পামেলার সঙ্গে এই ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছে বিজেপি নেতা প্রবীর কুমার দে'র৷ কিন্তু এবার আদালতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে পামেলার মুখে শোনা গেল বিজেপি নেতা রাকেশ সিং-এর। কিন্তু কে এই রাকেশ সিং? বারবার বিতর্কিত ঘটনায় কেন জড়াচ্ছে তাঁর নাম?
এর আগেও বিজেপি নেতা জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় নাম উঠে এসেছিল এই রাকেশ সিংয়ের। কিন্তু কে এই রাকেশ সিং? তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ই বা কী? অধীর চৌধুরি নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা রাকেশ সিংহ বরাবরই রাজনৈতিক আঙিনার জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত নেতা। রাকেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অনুগামী বলেই পরিচিত ছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। তবে ২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনের আগেই অবশ্য হাত শিবির বদলে বিজেপি দলে যোগ দেন রাকেশ সিং।
কংগ্রেসে তিনি মূলত শ্রমিক নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচার ভবনে এক মামলার সাক্ষী ও কতর্ব্যরত পুলিশকে হেনস্থার অভিযোগে রাকেশ-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেল হেফাজতে যাওয়ার পর একাধিক বার অধীরবাবু আলিপুর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাকেশের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এমনকী দলীয় সূত্রে খবর ছিল সেই সময় রাকেশকে জেল থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথাও বলেছিলেন অধীর। তবে শেষমেশ বেঁকে বসেছিলেন রাকেশই।
কলকাতা পুরসভার ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাকেশের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল এই অধীর অনুরাগীর। এরপর সে বছরের জানুয়ারিতে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ সিনেমার প্রদর্শন বন্ধ করতে গিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিংমলে হামলা চালানোর ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় তাঁর। এই ঘটনায় চিড়িয়াখানার কাছে, তাঁর বাড়ির সামনে থেকেই কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার অফিসারেরা তাঁকে গ্রেফতার করেন। রাকেশের রাজনৈতিক ইতিহাস জানায়, শাসকদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ জানিয়ে বারবার পথে নেমে দলের কর্মীদের নিয়ে ‘শক্তিপ্রদর্শন’ করতে গিয়ে ক্ষিণ কলকাতার এই নেতাকে বহুবার গ্রেফতার হতে হয়েছে।
কিন্তু লোকসভা নির্বাচন সামনে আসতেই কংগ্রেসের ডাকাবুকো নেতা হাত ছেড়েই পদ্মে যোগ দেন। নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে মুকুল রায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের উপস্থিতিতেই চলে এই দল বদলের পালা। দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে লোকসভায় প্রার্থীও হন তিনি।