সন্দেশখালির বাসিন্দাদের ক্ষোভ সামলাতে গিয়ে শনিবার ক্ষোভের মুখেই পড়লেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। 'কবে শাহজাহান গ্রেফতার হবেন?' সন্দেশখালির বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়েন সেচমন্ত্রী পার্থ। ক্ষোভ সামলাতে গিয়ে ইডির কোর্টে বল ঠেললেন পার্থ। বললেন, 'ইডি তদন্ত করছে। রাজ্য পুলিশ তদন্ত করলে ১০ দিনের মধ্যে গ্রেফতার হবে।' মন্ত্রীদের কাছে সন্দেশখালির বাসিন্দাদের দাবি, 'শাহজাহানের গ্রেফতার চাই।' অন্য এক মন্ত্রী সুজিত বললেন, 'গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনা হবে।'
পরে সেচমন্ত্রী বলেন, 'ইডি, রাজ্য পুলিশ, হাইকোর্ট গ্রামবাসীদের বোঝাতে পারিনি। শিবু, উত্তমকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে।' দমকলমন্ত্রী সুজিত বলেন, 'ওঁরা বলেছেন দিদিকে সবটা জানাতে। আমি বলেছি জানিয়ে দেব।'
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। ধৃত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। গ্রেফতার করা হয়েছে শিবপ্রসাদকেও। তবে শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। এত দিন পরও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা।
অন্য দিকে, উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ বার অস্থায়ী ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিল পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ শোনার জন্য সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত বেড়মজুর এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছে। শুক্রবার বেড়মজুর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।
শনিবার সন্দেশখালি যান ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সন্দেশখালিতে পৌঁছে যান মীনাক্ষী-সহ সিপিএমের যুব নেতারা। গ্রামে গ্রাম ঘুরে কথা বলেন তাঁরা। দুপুর দেড়টার পর মীনাক্ষীদের আটকায় পুলিশ। যা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়।