ছাত্র আন্দোলনের নামে আরও বড় অশান্তির পরিকল্পনা... শুরু থেকেই এমনটাই বলে আসছে পুলিশ। গতকালই ২৫ জনকে সেই আশঙ্কায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর হাওড়া ময়দান, মহাত্মা গান্ধী রোড, ফরশোর রোড, সাঁতরাগাছি কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তিনি যা-যা বললেন, তা বুলেট পয়েন্টের আকারে দেওয়া হল:
- আমাদের কাছে আগে থেকেই এই আন্দোলনে অশান্তির খবর ছিল। সেই আশঙ্কা আজ সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। গত সূত্র মারফত খবর পেয়ে আমরা ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। গতকাল রাত্রে ৪ জনকে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
- অস্ত্র নিয়ে, বোমা নিয়ে, গুলি নিয়ে আজ এখানে অশান্তির আশঙ্কা ছিল। এই বিষয়ে দু'জনকে আমরা ধরেছি। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- লাশ ফেলতে হবে, বডি ফেলতে হবে এই ধরণের আলোচনা বিভিন্ন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে হচ্ছিল। আমাদের কাছে সেই বিষয়ে আগে থেকে খবর ছিল।
- নবান্ন-মুখী সমস্ত রাস্তায় কন্ট্রোল করা হয়েছিল। আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হবে বলা হচ্ছিল। কিন্তু কতটা শান্তিপূর্ণ থাকল তা দেখতেই পেলেন। আন্দোলনকারীরা এলেন, ব্যারিকেড ধরে তাঁরা ঝাঁকানো শুরু করলেন। পুলিশ বারবার ঘোষণা করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে অনুরোধ করে, ব্যারিকেড ভাঙবেন না, আর্জি জানায়।
- সাঁতরাগাছি দিয়ে শুরু। পুলিশের দিকে লাঠিসোটা, বোতল,ইট ছোড়া হয়। পুলিশকে মারধর, রক্তাক্ত করা, গাড়ি জ্বালানো। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নামে বিশৃঙ্খলা, তাণ্ডব। সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায়।
- পূর্ণ কর্মদিবস ছিল।এমন দিনে এমন কাজ করার চেষ্টা করছিল যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি হয়ে যায়। পুলিশ যাতে প্ররোচিত হয়ে যায়। পুলিশ সেই ফাঁদে পা দেয়নি।
- পুলিশ রক্তাক্ত হয়েও কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে সংযমের প্রমাণ দিয়েছে। আমাদের প্রচুর সহকর্মী আহত। ১১-১২ জন আহত।
- ৯৪ জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। আজ যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করলেন, অশান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ আন্দোলনকারী যেভাবে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করলেন, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ আমরা প্ররোচনায় পা দিইনি, সংযমের পরিচয় দিয়েছি মানেই এমন নয় যে এঁদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। ৯৪ জনকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে, ভিডিও ফুটে দেখে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- ছাত্র সমাজের নামে আন্দোলন। কিন্তু সেখানে আন্দোলনের চেহারা আমরা দেখলাম। পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত ছাত্র কেউ সেখানে ছিলেন না। আমাদের বিশ্বাস প্রকৃত ছাত্ররা এমন অশান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যোগ দিতে পারেন না।
- জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হল। অস্ত্র, বোমা, গুলি নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল। গতকাল যদি ওই ২৫ জনকে গ্রেফতার করা না হত, আজকের থেকেও আরও খারাপ পরিস্থিতি হতে পারত। মানুষের প্রাণহানি হতে পারত।
- কাল একটি রাজনৈতিক দলে তরফে বনধ্ ডাকা হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন, কিন্তু তবু আমি একটি অর্ডার পড়ে দিতে চাইছি। বম্বে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, কোনও রাজনৈতিক দলের ডাকা বন্ধ বেআইনি। এটা আমরা নয়, বম্বে হাইকোর্ট, কেরল হাইকোর্টের একাধিক অর্ডারে আছে।