এ বছর প্রাথমিকে নিয়োগে TET পরীক্ষা হবে না। আজ অর্থাত্ সোমবার জানিয়ে দিলেন প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। মূলত, আইনী জটিলতার জেরেই যে টেট হচ্ছে না, তা বোঝা গেল পর্ষদ সভাপতির কথায়। পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর নিশানা, তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে চাকরি বাতিল হওয়া, পরীক্ষা হওয়াই ভবিতব্য। নতুন কিছু নয়। বাদ বাকি সব চলবে।
কথা রাখতে পারল না পর্ষদ
বস্তুত, প্রাথমিকে নিয়োগের টেট পরীক্ষা ও নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে। দীর্ঘদিন বন্ধই ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টেট পরীক্ষা হয়েছিল রাজ্যে। তারপর পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, আর কোনও সমস্যা নেই, প্রতিবছর টেট পরীক্ষা হবে। কিন্তু দিনের শেষে দেখা যাচ্ছে, পর্ষদ কথা রাখতেই পারল না। যার নির্যাস, এ বছর টেট পরীক্ষা হচ্ছে না।
আগে নিয়োগ, তারপর পরীক্ষা
কেন হবে না? এদিন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, 'আমরা আগে দ্রুত নিয়োগ করব। তারপর পরীক্ষা নেব।' ২০২২ এবং ২০২৩ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের টেট হয়। নিয়ম মেনে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ওই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি বলেন, '২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যেক বছর টেট গ্রহণ করা। পর পর দু’বছর আমরা তা করেছি। কিন্তু দু’বছরে যাঁরা উত্তীর্ণ হয়েছেন, বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে তাঁদের নিয়োগই এখনও শুরু হয়নি। তাই টেট এ বছরে না হলেও কিছুটা পিছিয়ে তা ছ’মাসের মধ্যে গ্রহণ করা হবে।'
প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্য়তা বিচারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পরীক্ষা এই টেট। পাঁচ বছর পর ২০২২-এ পরীক্ষা দিয়েছিলেন লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন দেড় লক্ষ প্রার্থী। তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। ২০২৩-এ পরীক্ষা হলেও, এখনও ফল প্রকাশ হয়নি। এদিকে, পরীক্ষা না হলেও স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তীতে বেড়ে যাবে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা। পর্ষদ সূত্রের খবর, আগের কিছু আইনি জট ছিল, যার জেরে প্রক্রিয়াগুলো আটকে আছে।
রাজ্য সরকারকে নিশানা সুকান্তর
টেট পরীক্ষা না হওয়া প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। বলেন, 'শুধু বেকারদের চাকরি পাওয়া নয়, এই সব প্রাথমিক স্কুলগুলিতে গরিব মানুষের বাচ্চারা পড়াশোনা করে। যারা প্রাইভেট স্কুলে পড়তে পারে না। তাদেরই ভবিষ্যত্ অন্ধকার। আগামী দিনে যাতে কোনও গরিবের ছেলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে না পারেন, তার ব্যবস্থা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'