ব্যারাকপুরে বর্তমানে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ, যিনি কারাবন্দী হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে লড়াই করছেন। সোমবার তার ছেলে রাহুল ঘোষ পিটিআইকে জানান যে, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি তাঁর মাকে নিয়ে ভারতে পৌঁছেছেন এবং বর্তমানে রাহুলের সঙ্গেই রয়েছেন।
রাহুল জানান, তার বাবা তিন বছর আগে একটি দুর্ঘটনার শিকার হন এবং চিকিৎসার জন্য প্রায়ই ভারতে আসেন। তবে তিনি তার বাবার নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। “আমি বাবাকে অনুরোধ করেছি বাংলাদেশে না ফিরে কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য। কিন্তু তিনি চিন্ময় দাস প্রভুর মামলা লড়ার জন্য অনড়,” বলেন রাহুল।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, যিনি বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনীর জাগরণ জোটের মুখপাত্র, তাকে এই মাসের শুরুতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে জামিন নামঞ্জুর করে আদালত ২ জানুয়ারী পর্যন্ত কারাগারে পাঠিয়েছে।
রবীন্দ্র ঘোষ, যিনি ইতোমধ্যেই তার কাজের জন্য ঝুঁকি স্বীকার করেছেন, বলেন, “আমি জানি যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতে পারে এবং আমার জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। তবুও আমি চিন্ময় দাস প্রভুর পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব।”
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্বল পরিস্থিতি ঘোষের মতো আইনজীবীদের অবস্থানকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতির মুখোমুখি করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২২ শতাংশ হিন্দু ছিল। কিন্তু কয়েক দশকের প্রান্তিকীকরণ এবং সহিংসতার ফলে আজ এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নতুন চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির জন্য রবীন্দ্র ঘোষের এই প্রচেষ্টা হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও এটি তাঁকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তবুও তিনি এই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।