নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার আরও এক তৃণমূল বিধায়ক। অবশেষে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে। ৬৫ ঘণ্টা ধরে টানা জিজ্ঞাসাবাদ ও খানাতল্লাশির পর বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করল সিবিআই।
সোমবার ভোরে নিয়োগে দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে কে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। ভোর ৫টা ১৭ মিনিট নাগাদ জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে নিয়ে বের হয় সিবিআই-এর একটি দল। কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ওই দল।
প্রসঙ্গত, গত ২ দিন ধরেই জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে ৩০০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিধায়কের মুর্শিদাবাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই। সেগুলিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটায় বিধায়কের বাড়িতে দুটি গাড়িতে আসেন সিবিআইয়ের প্রতিনিধিদল। তদন্তে গতি আনতে তারপর আরও দুটি গাড়িতে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। সোমবার ভোররাতে (২.৩৫ নাগাদ) আরও একটি গাড়িতে সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আন্দি গ্রামে বিধায়কের বাড়িতে ঢোকেন। তাদের সঙ্গে আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ভোর ৫.১৫ নাগাদ জীবনকৃষ্ণকে বাড়ি থেকে বের করে সিবিআইয়ের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিধায়কের পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রথম থেকেই তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন বিধায়ক। তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় বাড়ির পুকুরে নিজের দুটি মোবাইল ফোন ফেলে দেন তিনি। টানা ৩৮ ঘণ্টা ব্যয় করে পুকুরের জল সেঁচে সিবিআই অধিকারিকরা একটি মোবাইল ফোন তোলেন। আরও একটি মোবাইলের সন্ধান চলছে। বাড়ির পিছনে রাইস মিলের পাঁচিল সংলগ্ন জঙ্গল থেকে আগেই পাঁচটি ব্যাগ ভর্তি নথি উদ্ধার করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেই ব্যাগ গুলিতে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা। এছাড়া বিধায়কের শোয়ারঘরের বিছানার নীচে থেকে বেশ কয়েকটি ফাইল ও ঠাকুর ঘরের সিঁদুরের কৌটো থেকে একটি পেনড্রাইভ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অবশেষে নিজাম প্যালেসে আসা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের এই তৃণমূল বিধায়ককে। তাকে আজ আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চাইবে সিবিআই।