কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে জেলায় জেলায়- হাসপাতালে হাসপাতালে বিক্ষোভ চলছে। সুবিচার ও নিরাপত্তার বাড়িতে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে একাংশ। সে কারণে ব্যাহত হয়েছে হাসপাতালের রোগী পরিষেবা। শাস্তির দাবিতে মিছিল হয়েছে কলকাতার রাস্তায়।
নৃশংস এই ঘটনার অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম সঞ্জয় রায়। শুক্রবার রাতে তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। ধৃতকে শনিবার আদালতে হাজির করানো হবে। ২২ বছর বয়সী মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুতে সরব সাধারণ মানুষ থেকে তারকারাও।
আর জি কর ইস্যুতে শুরু থেকেই সরব অভিনেতা- চিকিৎসক কিঞ্জন নন্দও। ডাক্তারির পাশাপাশি অভিনয়ও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিঞ্জল নিজে আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক। ঘটনার দিন রাতেও হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন কিঞ্জল। মৃত চিকিৎসকের জন্য প্রতিবাদী মোমবাতি মিছিলের ডাক দেন। এই ঘটনার দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় লেখেন, "ভাষা নেই নিন্দের। এই দোষী দের অন্তত সাজা হোক। এইবার আর মেয়েটার দোষ, সে ভুল ভাবে ভুল সময়ে ভুল জায়গায় ছিল বলে তার দিকে আঙুল তুলব না। একটা হাসপাতালেও মেয়েরা নিরাপদ নয়? যাব কোথায়?"
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। পরিচালক লেখেন, "আর জি করে ঘটনা নজিরবিহীন, মর্মান্তিক ও ভয়াবহ। শহরের প্রথম শ্রেণীর কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না আমরা ! এই মৃত্যু, অবমাননা আর অনিরাপত্তা নিয়ে কথা না বলে পারলাম না। এর নিরপেক্ষ বিচার চাই। অপরাধীকে খুঁজে বের করে তাকে কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে। এর আগেও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেক অপমান, নিগ্রহ সহ্য করতে হয়েছে। এবার সেটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এর আশু প্রতিকার দাবি করছি।"
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় লেখেন, "আমার শহর কুন্ঠিত বড়, ক্ষমা করো তুমি মেয়ে, পুরুষ বলেই গাইছি এ গান, শুধু মার্জনা চেয়ে..." সঙ্গীতশিল্পী অনুপম রায় প্রশ্ন তোলেন, "বিচার কি কোনওদিন পাওয়া যাবে?"
শ্রীলেখা মিত্রের কথায়, "ধর্ষণ এবং খুন! আর এটাকে আত্মহত্যা বলে মূর্খামি করা হচ্ছে? যে বা যারা এই ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের সকলকে বরখাস্ত করার দাবি জানাই। অত্যন্ত নারকীয় ঘটনা। অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাওয়া উচিত। নিহতের পরিবার যেন বিচার পায়।"
প্রসঙ্গত, কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল আরও বলেন, "সারা রাত তদন্ত চালানো হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ-সহ বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে একজনে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরিবার অন্য কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করতে চাইলে আপত্তি নেই। আমরা সহযোগিতা করব। আমাদের কোনও কিছু লুকোনোর নেই, স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হচ্ছে।"