RG Kar Doctor Murder-Rape: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে এল প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান। এসেছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও। তাতে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ এলে। ঘটনায় রাতভর তদন্ত চলে। মাঝরাতেই এক ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, যৌনাঙ্গে ক্ষত, দু'চোখ দিয়েই বেরোচ্ছিল রক্ত। মুখে, ঠোঁটে, পেটে, হাতে-পায়ে, পেটে, এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মুখ, চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ, মুখে চোট, ভেঙে যায় নখ, যৌনাঙ্গে রক্তপাত, পায়ে ও পেটে আঘাত পায় বলে প্রমাণ মিলেছে। প্রাথমিক রিপোর্টেই তরুণীর সঙ্গে বর্বর নির্যাতনের চিত্রটি পরিষ্কার।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাত ৩টে থেকে ভোর ৬টার মধ্যে। ছাত্রীর গলার ডান দিকের একটা হাড় ভাঙা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সাধারণত গলায় হাত দিয়ে টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হলে এরকমভাবে হাড় ভাঙার ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে সেধরনের কিছু হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। সেমিনার হলের সামনে ছিল না কোনও সিসিটিভি।
পুলিশের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে উল্লেখ করা হয়েছে, দেহ উদ্ধারের সময়ে ছাত্রীর পরনে ছিল গোলাপি রঙের কুর্তি। যৌনাঙ্গের কাছে পড়েছিল ভাঙা চুলের ক্লিপ। চশমা ভাঙা অবস্থায় পড়েছিল দেহের কাছেই। একটি নীল রঙের ম্যাট্রেসের ওপর পড়ে ছিল দেহ। এরপর আরজি কর সূত্রে জানা যায়, সেই নীল ম্যাট্রেসেও মিলেছে রক্তের দাগ, মৃতার প্রচুর চুলও পাওয়া যায়। এর থেকে বোঝা যায়, ধস্তাধস্তি হয়েছিল।
পরিবারের অভিযোগ ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালে মহিলা ডাক্তারের অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। কর্মবিরতি ঘোষণা করেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। মৃত মহিলা ডাক্তারের মা-বাবাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মৃত যুবতীর মা-বাবা আর্জি জানান, 'আমাদের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।'
এদিন, মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মমতার তদন্ত কমিটিতে ইন্টার্ন কেন? ইন্টার্ন নির্জন বাগচী আরজি কর-এর TMCP ইউনিটের সদস্য বলে জানা যায়। এই কমিটির আরও এক ইন্টার্ন, সরিফ হাসান, একজন সক্রিয় টিএমসি সদস্য। তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
রাতেই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠন করে শুরু হয়েছে তদন্ত। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত খুনের মামলা রুজু করেছে। কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে।