সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা এবং সেখানকার জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারকে দল থেকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল। তাঁকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। পার্থ জানিয়েছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ফেরার উত্তমকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শেখ শাহজাহানকে ইডি ধরতে যাওয়ার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে সন্দেশখালিতে। শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল আগুনও জ্বলেছে সেখানে। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। শাসকদলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলছেন সেখানকার মহিলারা। এই আবহে প্রথম সন্দেশখালি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করল রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করার ঘোষণা করা হয়েছে দলের তরফে। উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল দল। এদিন কলকাতার ধর্নামঞ্চ থেকে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এই ঘোষণা করেন।
পার্থ ভৌমিক বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দলগতভাবে তদন্ত হবে। চারজনের একটি কমিটি তৈরি করে দেন। যেখানে তিনজন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, রথীন ঘোষ আছেন। আছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। তাঁদের বলা হয়েছিল এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট জমা দিতে। শনিবার দুপুর ১২টায় সেই রিপোর্ট জমা পড়ে। এরপরই দল সিদ্ধান্ত নেয় আজ থেকে ৬ বছরের জন্য উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করা হল।'
তবে একইসঙ্গে পার্থ বলেন,'বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাজেটকে কেন্দ্র করে সারা বাংলা আলোকিত। সেই সময় সন্দেশখালির একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি এবং সিপিএম দেখাতে চাইছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নাকি গণঅভ্যুত্থান হচ্ছে। সন্দেশখালি বিধানসভার মধ্যে সন্দেশখালিতে ১৬টা গ্রামপঞ্চায়েত। ১৬টার মধ্যে একটা অঞ্চলের নাম সন্দেশখালি গ্রামপঞ্চায়েত। এখানে আমরা ২০১১, ২০১৬, ২০১৯ প্রতি নির্বাচনেই পরাজিত হয়েছি। এটা বোঝাই যাচ্ছে ওই এলাকায় বিরোধীদের শক্তি আমাদের থেকে বেশি।'
পার্থ ভৌমিক জানান, মানুষের কথাকে গুরুত্ব দেওয়াই তৃণমূলের প্রধান কাজ। তাই সেই এলাকা থেকে উত্তমের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো, খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ সামনে আসতেই দল কঠোর পদক্ষেপ করেছে।
অন্যদিকে সূত্রের খবর, শুক্রবার গভীর রাতে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে যান সুজিত বসু, নারায়ণ গোস্বামী, রথীন ঘোষ-সহ ওই জেলার কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। হাজির ছিলেন পার্থও। সেখানেই উত্তমকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন অভিষেক। তারপরই এদিন এই ঘোষণা।