শুক্রবার থেকেই বন্ধ রয়েছে শিয়ালদার ৫টি প্ল্যাটফর্ম। ১২ বগির লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারনের কাজ চলায় বিরাট ভোগান্তির মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। সময় যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে দুর্ভোগ। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে অনেককে। বনগাঁ, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, থেকে শুরু করে এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরাও পড়েছেন মারাত্মক বিপদে। কারণ রাজধানীর মতো ট্রেনও দাঁড়িয়ে থাকছে। রবিবার সেই ক্ষোভ বড় আকার নেয়। যার জেরে ভাংচুর চালান ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। ভেঙে যায় অনুসন্ধান অফিসের কাঁচ। পরে ঘটনাস্থালে আসে বিরাট পুলিশ বাহিনী। এরপরেই শান্ত হয় পরিস্থিতি।
শনিবার রাতে অনেকেই থেকে গিয়েছেন শিয়ালদায়। অনেককেই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান বাতিল করতে হয়েছে স্টেশনে এসে। আর নিত্যযাত্রীদের অনেককেই দেখা গিয়েছে লাইন ধরে হেঁটে গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে। গত তিনদিন ধরে এটাই ছিল শিয়ালদা মেন ও বনগাঁ শাখার পরিচিত দৃশ্য। এর মধ্যেই প্রবল ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে প্রান হারিয়েছেন মহম্মদ আলি হাসান আনসারি নামে ২২ বছরের এক যুবক। টিটাগড়ে ঘটে এই ঘটনা। এর পরেও রেলের পক্ষ থেকে কোনও কিছুই সঠিক ভাবে জানানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। সেই ক্ষোভ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সারা রাত ধরে স্টেশনে বসে থাকা যাত্রীদের একাংশ জানিয়েছেন, শনিবার স্টেশনে খাবারের দোকানেও খাবার পাওয়া যাচ্ছিল না। জল নিয়েও ছিল সমস্যা। হঠাৎ যদি ট্রেন দিয়ে দেয় প্ল্যাটফর্মে? সেই আশঙ্কায় স্টেশন ছেড়ে বেরোতেও পারছিলেন না তাঁরা। সব মিলিয়ে খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রাত কাটাতে হয়েছে তাদের। পাশাপাশি সকালেও ট্রেন চলা নিয়ে রেলের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
ট্রেন বন্ধ থাকায় বাড়তি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা এই বিপুল পরিমাণ মানুষের জন্য কিছুই নয়। ফলে বাসেও ভিড় বাড়ছে মারাত্মকভাবে। এই দুর্ভোগের মাঝে পূর্ব রেলের সিপিআরও কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য চালানো হচ্ছে অতিরিক্ত মেট্রো। চলছে অতিরিক্ত সরকারি বাসও। রবিবার দুপুর ২টোর মধ্যে শেষ হয়ে যাবে সংস্কারের কাজ। আর তারপরই ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে পরিস্থিতি।
রেলের পক্ষ থেকে রবিবার জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘন্টা আগেই কাজ শেষ হয়েছে শিয়ালদা স্টেশনে। দুপুর ২টোর সময় কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও রেলের দাবি, দুপুর ১২টার সময়েই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে গোটা পরিষেবা।