সেলফি তোলার হিড়িক। আর তার জেরে মার খাচ্ছে ফুলচাষ। কী করে তাঁদের থামানো যায়, তা নিয়ে জেরবার। বীরভূমের বিনুরিয়া গ্রামে এমনই সমস্যার মুখে পড়েছেন ফুলচাষীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনে সেলফি তোলার হিড়িকে সূর্যমুখী ফুলে ভরা ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার জোগাড়। সেলফি তোলা মানুষদের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন কৃষক বাবলু কোঁড়া। বীরভূমের বিনুরিয়া গ্রামের এই কৃষক ধান চাষ করে লাভ পাচ্ছিলেন না।
তাই তিনি বিকল্প চাষে জোর দেন। যাতে উপার্জন বাড়ানো যায়। সেই হিসেবে তার ৭ বিঘে জমিতে সূর্যমুখী চাষ শুরু করেছিলেন। বাজার ঘুরে জেনেছিলেন তৈলবীজ হিসেবে সূর্যমুখী ফুলের যথেষ্ট দর আছে এখনও।
ফলে তিনি বহু চেষ্টা করে তার ৭ বিঘে জমি ফুলে ভরিয়ে তোলেন। কিন্তু বাবলু হতবাক হয়ে যান তাঁর ফুল ভরা ক্ষেতে হামলে পড়া মানুষদের দেখে।
সোমবার বাবলু তার ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দেখেন অর্ধেকের বেশী ফুলের গাছ থেঁতলে পড়ে আছে। তা দেখে চমকে উঠেছেন। কোথাও বা গাছ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বাবলু বলেন, "গরু ছাগল পোকামাকড় তাড়িয়ে কী করে ফসল ফলাতে হয়, সেটা আমি জানি। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি শিক্ষিত, সম্পন্ন বাড়ির ছেলে মেয়েরা সেজেগুজে ফুলের ক্ষেতের মাঝে ঢুকে যেভাবে সারাদিন ছবি তুলছেন মোবাইল ফোনে তা দেখে অবাক লাগছে।
তিনি আরও জানান, কত বড় বাড়ির ছেলেমেয়ে ওঁরা। কিন্তু গাছের ক্ষতি করতে একটু মায়াদয়া নেই ওঁদের। জুতো পরে, ক্ষেতের ভেতরে ফুলের মাঝে ছবি তুলতে এমন হামলে পড়ছে যে এবার আর কোনও লাভের আশা দেখতে পারব না। এত ছবি তুলে কি লাভ জানি না!"
ভোটের তপ্ত বাজারে বাবলুর আর্তি কোনও গুরুত্ব পায় না। বাবলুর ক্ষেতের ফুলের ছবিতে ভরে উঠছে সোশাল মিডিয়া।, ওদিকে ফসল ফলিয়ে লাভ না পেলে কীভাবে বাঁচবেন ভাবছেন বাবলু।