অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন সন্দেশখালিকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। গ্রেফতারির পর প্রথমবার মুখ খুললেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া নেতা। শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান বললেন, 'সব মিথ্যা, সব মিথ্যা। প্রমাণ হবে। আল্লাহ, একদিন বিচার করবে।' এদিন জোকা ইএসআই-তে শাহজাহানকে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়ই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মুখ খোলেন শাহজাহান।
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। যে ঘটনা ঘিরে সরগরম রাজনীতির ময়দান। ঘটনার ৫৫ দিন পর গ্রেফতার করা হয়েছে শাহজাহানকে। মঙ্গলবার এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তারপর থেকেই সিবিআইয়ের হাতে শাহজাহান।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। পরে জামিন পান বিকাশ। গ্রেফতার করা হয়েছে শিবপ্রসাদকেও। গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকেও। তবে শাহজাহান এতদিন অধরা ছিলেন। তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। অবশেষে পুলিশি জালে তৃণমূলের দাপুটে নেতা। গত সপ্তাহে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
শেখ শাহজাহানের মতো অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বারাসতের সভায় সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শাহজাহানের নাম নেননি প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, 'অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার।' বস্তুত, সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআইয়ের হাতে শাহজাহানকে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। বুধবার সেই মামলায় দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত। সেই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল সরকারকে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী।