সন্দেশখালির ঘটনায় বাংলায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা শিবরাজ সিং চৌহান। সন্দেশখালির ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন শিবরাজ। এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন তিনি।
সোমবার হাওড়ায় বিজেপির সাংগঠনিক সভায় যোগ দিয়েছিলেন শিবরাজ। সেখানে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে, সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যে ভাবে অত্যাচার হয়েছে, তা লজ্জার। তাঁর কথায়, 'এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। অথচ তিনি রাজ্যের মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারছেন না। আমরা চাইব জাতীয় মহিলা কমিশ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আসুন। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা উচিত। অপরাধীরা যেন কোনও ভাবেই ছাড়া না পায়।' এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। সম্প্রতি শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। ধৃত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার।
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'যাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং যারা হিংসাত্মক আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে।'সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ যে মহিলারা, তাঁদের সঙ্গে সোমবার দেখা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁদের ক্ষোভের কথা শুনলেন। নিজেকে 'নির্যাতিতাদের ভাই' বলে সম্বোধন করলেন রাজ্যপাল। সন্দেশখালির বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ সারলেন রাজ্যপাল বোস।
অন্য দিকে, শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। এত দিন পরও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। সোমবার আদালতে আগাম জামিনের মামলায় শাহজাহানের তরফে আর্জি জানানো হয়েছে যে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে না, এই আশ্বাস দিলে তবেই তিনি ইডির তলবে সাড়া দেবেন। সোমবার তৃতীয় বারের জন্য শাহজাহানকে তলব করেছিল ইডি। এখনও পর্যন্ত ইডির দফতরে হাজিরা দেননি তিনি।