Advertisement

Striped Hyenas: পুরুলিয়ায় ঘুরছে হায়নার পাল, ক্যামেরায় ধরা পড়ল ৬০টি ছবি

পুরুলিয়ার জঙ্গলে হায়না বাড়ছে। এমনটাই মনে করছেন সেখানকার বনদফরের কিছু কর্মী। কারণ গত পাঁচমাসে পুরুলিয়ার জঙ্গলে বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ৬০টিরও বেশি ডোরাকাটা হায়নার ছবি উঠেছে।

ডোরাকাটা হায়না। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 29 Apr 2024,
  • अपडेटेड 2:38 PM IST
  • পুরুলিয়ার জঙ্গলে হায়না বাড়ছে।
  • এমনটাই মনে করছেন সেখানকার বনদফরের কিছু কর্মী।

পুরুলিয়ার জঙ্গলে হায়না বাড়ছে। এমনটাই মনে করছেন সেখানকার বনদফরের কিছু কর্মী। কারণ গত পাঁচমাসে পুরুলিয়ার জঙ্গলে বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ৬০টিরও বেশি ডোরাকাটা হায়নার ছবি উঠেছে। এই হায়না দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের আধা-শুষ্ক ও শুষ্ক বনাঞ্চলে বসবাস করে বলে বিশ্বাস করা হয়। বিষয়টিতে খুব কমই পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। পুরুলিয়ার দুটি জঙ্গলে বসানো ক্যামেরায় ওঠা ছবি দেখে নড়ে চড়ে বসেছে পুরুলিয়ার বন দফতরের কর্মীরা।

ক্যামেরাগুলি একটি প্রোজেক্টের অংশ হিসাবে ইনস্টল করা হয়েছিল। যা ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার টাকায় হচ্ছে।  হায়নাদের বাসস্থান সম্পর্কে ওই প্রোজেক্টটি চলছে। ক্যামেরাগুলি পর্যায়ক্রমে দুটি বনাঞ্চলে ক'য়েকটি ছোট পকেটে ইনস্টল করা হয়েছিল। পুরুলিয়া বন বিভাগের অধীনে অযোধ্যা পাহাড় এবং বাঘমুন্ডি এবং কংসাবতী উত্তর বন বিভাগের অধীনে গড়পঞ্চকোট পাহাড় এবং আশেপাশের অঞ্চলে ক্যামেরা বসানো হয়।।

দুর্গাপুর সরকারি কলেজের সংরক্ষণ জীববিজ্ঞান বিভাগের গবেষক দেবায়ন গায়েনের নেতৃত্বে এই গবেষণা চলছে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'ক্যামেরাগুলি ২০২৩ সালে নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত যা ছবি তুলেছে, তাতে হায়নার ৬০টিরও বেশি ছবি পেয়েছি। হায়নার গর্তের পাশে পায়ের দাগ, গবাদি পশুর হাড়, এবং অন্য প্রাণীর হাড় পেয়েছি।'
ওই ছবিগুলো এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরোক্ষ প্রমাণের সঙ্গে সেগুলিকে এক করা হচ্ছে। এরপর সেগুলিকে রাজ্য বন দফতরে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। গত বছর রাজ্য বন দফতর কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, বাঁকুড়ার সালতোরা বন পকেটে ডোরাকাটা হায়েনাদের একটি ক্ষণস্থায়ী দল রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। সালতোরার একাধিক পরিত্যক্ত খনিকেও হায়নারা নিজেদের বাসস্থান বানিয়েছে।

পুরো পর্যবেক্ষণটির চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। ছবি দেখে মনে করা হচ্ছে সেখানে ১০ থেকে ১৫টি হায়না থাকতে পারে। গবেষণাটিতে দক্ষিণবঙ্গে "কম স্তন্যপায়ী প্রাণীদের" জনসংখ্যা, প্রাচুর্য এবং বন্টন অনুমান করার চেষ্টা করা হয়েছে। ডোরাকাটা হায়না ছাড়াও, কম স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় নেকড়ে, গোল্ডেন জ্যকল এবং বেঙ্গল ফক্স।
ওইসব প্রাণীরা দীর্ঘকাল ধরে দক্ষিণবঙ্গের বনাঞ্চলে বসবাস করছে বলে বিশ্বাস করা হয়। তবে তাদের জনসংখ্যা মূলত অনথিভুক্ত ছিল। এবং কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বন্টনের পরিমাণ মূলত আন্দাজে ধরা হত।

Advertisement

ভারতের জুলজিক্যাল সার্ভে ওইসব প্রাণীর জনসংখ্যা, বাসস্থান এবং বন্টন অনুমান করার চেষ্টা করেছিল ২০২১ সালে। তার রিপোর্টও পেশ করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুসারে, পুরুলিয়ায় ডোরাকাটা হায়েনার জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত আবাসস্থল ছিল ৩,০২২ বর্গ কিমি। বাঁকুড়ার ছিল ৫৯৭ বর্গ কিমি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের আয়তন ৩২৯ বর্গ কিমি।

বনদফতর সূত্রে খবর, ভারতে ডোরাকাটা হায়েনার জন্য কেন্দ্রীভূত সংরক্ষণ প্রচেষ্টার অভাব রয়েছে। পুরুলিয়ায় এই ব্যবধান মেটাতে একটি র‌্যাপিড অ্যাকশন প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে পুরুলিয়ায় হায়না কত, তা জানার পাশাপাশি এই অঞ্চলের প্রজাতির জন্য হুমকি বোঝা এবং মোকাবিলা করা।

ডোরাকাটা হায়েনা আফ্রিকার দাগযুক্ত হায়েনাদের চেয়ে ছোট প্রাণী। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক জানিয়েছে, দাগযুক্ত হায়নারা বিখ্যাত স্কেভেঞ্জার এবং প্রায়শই অন্যান্য শিকারীদের অবশিষ্টাংশে খাবার খায়। কিন্তু এই জন্তুগুলিও দক্ষ শিকারী যারা একটি বন্য হরিণ ধরে খেতে পারে। ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার একজন গবেষক জানিয়েছেন, দাগযুক্ত হায়নাদের তুলনায়, ডোরাকাটা হায়েনারা অনেক বেশি নমনীয়। বেশিরভাগই গর্তের মধ্যে দিন কাটায় এবং রাতে বেরিয়ে আসে।

পুরুলিয়ার এই হায়নাদের খাদ্যের প্রধান উৎস হল অন্যান্য প্রাণীর মৃতদেহ। স্কেভেঞ্জার হিসাবে তারা খাদ্য শৃঙ্খলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং রোগের বিস্তার রোধ করতে সহায়তা করে। সাহিত্য, ঐতিহ্যবাহী লোকগাথা ও জনপ্রিয় সংস্কৃতি কিন্তু হায়নার প্রতি সদয় হয়নি। ডিজনির জনপ্রিয় অ্যানিমেশন ফিল্ম, দ্য লায়ন কিং-এ হায়নাদের নৃশংস খাদক দেখান হয়েছে।

হায়েনাদের চেহারা দেখে এবং সচেতনতার অভাবে প্রায়শই মানুষের হাতে তাদের প্রাণ যায়। ২০২০ সালের জুলাই মাসে পুরুলিয়ার একটি গ্রামে একটি ডোরাকাটা হায়েনাকে মেরে মাথা কেটে নেওয়া হয়। বন দফতরের অনুমান, ওই হায়নাটি গ্রামে গিয়ে কোনও গবাদি পশুর ওপর হামলা করায় লোকজন সেটিকে মেরে ফেলেছে। ২০২৩ সালেও মেদিনীপুরের গ্রামে একটি হায়নাকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement