তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী হলেন সুকান্ত মজুমদার এবং শান্তনু ঠাকুর। রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নেন তাঁরা। কিন্তু শপথ নিলেও তাঁদের দফতর সম্পর্কে জানানো হয়নি। আজ, সোমবার ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করা হল। সুকান্ত হলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। সেইসঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও তাঁকেই করা হল। আর পুরোনো দফতরের দায়িত্বেই রাখা হল শান্তনুকে। অর্থাৎ, আরও একবার জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হল তাঁকে।
বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ছিলেন সুভাষ সরকার। তিনিই ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। তিনি এবার ভোটে হেরে গিয়েছেন। সেই দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হল বাংলার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। বাংলায় এবার আগের আসনগুলিই ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। তাঁদের আসন সংখ্যা ১৮ থেকে ১১তে নেমেছে। কিন্তু তারমধ্যেই জয় ধরে রাখতে পেরেছেন সুকান্ত ও শান্তনু। যেকারণেই সুকান্তকে নতুন করে মন্ত্রিত্ব দেওয়া ও শান্তনুকে পুরোনো পদেই বহাল রাখল বিজেপি।
দ্বিতীয় বারের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এ বার ভোটে তিনি তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসকে ৭৩ হাজার ৬৯৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। ২০১৯ সালে ভোটে জিতে বন্দর, নৌ-পরিবহণ ও জলপথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল শান্তনুকে। মনে করা হচ্ছিল, এ বার তাঁকে পূর্ণমন্ত্রী করা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা না হলেও, আগেই পদেই তাঁকে বহাল রাখা হল।
শান্তনু মতুয়া ঠাকুরবাড়ি পরিবারের সদস্য এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি। এ রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের ভোট টানতে শান্তনুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মন করেন বিজেপির অনেকে। এ সব কথা মাথায় রেখেই তাঁকে এবারও মন্ত্রী করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
সেইসঙ্গে, এবার হুগলি, কোচবিহার, বর্ধমান–দুর্গাপুর, বাঁকুড়া বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে বনগাঁ বুক আগলে রাখেন শান্তনু ঠাকুর। তারই পুরষ্কার হিসেবেই আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছেন শান্তনু ঠাকুর। এমনকী সিএএ’র বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। তারপরও নিজের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন শান্তনু।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিনের অধ্যাপক সুকান্তর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি দলের অন্দরে ভাল বলেই খবর। গতবার উত্তরবঙ্গ থেকে দু’জন মন্ত্রী থাকলেও এ বার তা নেমে এল এক জনে। দলে জেপি নড্ডা এবং প্রধানমন্ত্রীর খুব ‘কাছের লোক’ সুকান্ত তাই স্বাভাবিক কারণেই মন্ত্রিত্বের দাবিদার হিসেবে এগিয়ে ছিলেনই। তা ছাড়া, রাজ্য সভাপতি পদের গুরুত্বও কাজ করেছে। যেকারণেই তাঁকে মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ বলেও মনে করছেন অনেকে।