সন্দেশখালিকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে ফের চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবারও একই দাবি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। বৃহস্পতিবার শাহজাহানের গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসার পর এক্স হ্যান্ডলে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক লিখেছেন, 'ওঁর (শাহজাহান) সঙ্গে মমতার পুলিশের ডিলের পরেই তথাকথিত গ্রেফতার করা হয়েছে (পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে)।' লকআপ এবং কারাগারে কী সুবিধা পাবেন শাহজাহান, সেই নিয়ে ডিল হয়েছে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা এ-ও বলেছেন, 'গতকালই বলেছিলাম, মমতা পুলিশের সেফ কাস্টডিতে রয়েছেন শাহজাহান।'
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। শাহজাহানকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী নেতারা। সম্প্রতি তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, ৭ দিনের মধ্যে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হবে। এই 'ডেডলাইনের' মধ্যেই বুধবার রাতে মিনাখাঁ থেকে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার এক্স হ্যান্ডলে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, 'গতকাল রাত ১২টা থেকে মমতার পুলিশের সেফ কাস্টডিতে রয়েছেন শাহজাহান। তাঁকে বেড়মজুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে মমতার পুলিশের সঙ্গে ডিল করেছেন শাহজাহান। পুলিশ এবং বিচারবিভাগীয় হেফাজতে যখন থাকবেন, সেই সময় যাতে তাঁর যথাযথ যত্ন নেওয়া হয়, তাই নিয়ে রফা হয়েছে।' এরপরই শুভেন্দু লিখেছেন, শাহজাহানকে ফাইভ স্টারের সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোন দেওয়া হবে। যাতে ভার্চুয়ালি তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। শুভেন্দুর সংযোজন, 'উডবার্ন ওয়ার্ডে তাঁর জন্য বেড রাখা হচ্ছে।'
শাহজাহানের গ্রেফতারে আইনি বাধা ছিল বলে এদিন জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেছেন, 'পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ করা হচ্ছিল। এটা ঠিক নয়। শাহজাহানকে গ্রেফতারে আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর গত রাতে মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।' পুলিশের শীর্ষকর্তার কথায়, 'আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। বাধ্যবাধকতা উঠে যেতেই গ্রেফতার।' ইডির বাধ্যবাধকতা ছিল না। তা হলে তারা কেন গ্রেফতার করল না, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ। ১৪৭, ১৪৮-সহ একাধিক ধারায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ। সুপ্রতিম আরও বলেছেন, 'এমন কিছু করবেন না, যাতে এলাকায় বিভেদ সৃষ্টি হয়। তাঁর সংযোজন, 'জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক, প্ররোচনামূলক মন্তব্য করছেন। এটা ঠিক নয়।'