Advertisement

Thunder Lightning: বাজ পড়ে ১৪ জনের মৃত্যু, কেন বজ্রপাত বেড়েছে-বাঁচতে কী করবেন?

মেঘলা আকাশ। ঝেঁপে বৃষ্টি। এলোমেলো ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গী হচ্ছে মুহূর্মুহূ বিদ্যুতের ঝলকানি আর কানফাটানো আওয়াজ। জানা যাচ্ছে, গতকালই বাজ পড়ে রাজ্যে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ইদানীং বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়েছে। বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা গত দুই থেকে তিন বছরে অনেকটাই বেড়েছে। কেন এই ঘন ঘন বাজ পড়ে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কীভাবে, কতটা সাবধান থাকতে হবে, এইসব নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আবহবিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।

ফাইল ছবি।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা ,
  • 28 Apr 2023,
  • अपडेटेड 10:36 AM IST
  • মেঘলা আকাশ। ঝেঁপে বৃষ্টি।
  • এলোমেলো ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গী হচ্ছে মুহূর্মুহূ বিদ্যুতের ঝলকানি আর কানফাটানো আওয়াজ।

মেঘলা আকাশ। ঝেঁপে বৃষ্টি। এলোমেলো ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গী হচ্ছে মুহূর্মুহূ বিদ্যুতের ঝলকানি আর কানফাটানো আওয়াজ। জানা যাচ্ছে, গতকালই বাজ পড়ে রাজ্যে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শুধু নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ইদানীং বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়েছে। বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা গত দুই থেকে তিন বছরে অনেকটাই বেড়েছে। কেন এই ঘন ঘন বাজ পড়ে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কীভাবে, কতটা সাবধান থাকতে হবে, এইসব নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আবহবিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।

আইএমডি-র হিসেব বলছে, ২০১৯-২০২০ সাল অবধি বজ্রপাতের ঘটনা বেড়েছে ভারতে। এই সময়ের মধ্যে চার লাখের বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারত ও ছোট নাগপুর মালভূমি অঞ্চল বজ্রপাতের হটস্পট হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালে বজ্রপাতে ভারতে মৃত্যু হয়েছে ২,৮৭৬ জনের, গত বছর ২,৩৫৭ জনের। এর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বিহারে প্রায় ৪০০ জন, মধ্যপ্রদেশে ৪০০ জন, ঝাড়খণ্ডে ৩৩৪ জন ও উত্তরপ্রদেশে ৩২১ জন। পশ্চিমবঙ্গে বজ্রপাতে মৃত্যু বেড়েছে। 

বজ্রপাতের সময় কীভাবে সাবধান থাকবেন? কী কী বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
প্রচণ্ড ঝড় ও বিদ্যুতের ঝলকানি শুরু হলে সাবধান হতে হবে। যদি বাড়ির বাইরে বা কোনও ফাঁকা জায়গায় থাকেন, তাহলে দ্রুত বাড়ি ফেরার চেষ্টা করুন। না হলে কোনও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন। কোনও কংক্রিটের আচ্ছাদনের নীচে আশ্রয় নেওয়াই ভাল, কোনও গাছ বা টাওয়ারের নীচে নয়।

বজ্রপাতের সময় গাছপালা, উঁচু টাওয়ার বা বৈদ্যুতিক খুঁটির ধারেকাছে থাকা বিপজ্জনক। খোলা ছাদে থাকবেন না, বারান্দার গ্রিল ধরে না দাঁড়ানোই ভাল।

বাজ পড়ার সময় যে কোনও ধাতব বস্তু, সিঁড়ির রেলিং, জানলার গ্রিল, পাইপ ইত্যাদির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, গ্যাজেট, বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে এমন জিনিসপত্র না ছোঁয়াই ভাল। কোনওরকম বৈদ্যুতিক তারে হাত দেবেন না। এই সময় মোবাইল ব্যবহার করতেও বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে বাড়ির বাইরে থাকলে বাজ পড়ার সময় মোবাইলে কথা বলা বিপজ্জনক হতে পারে। বাড়িতে থাকলে ফোন চার্জে বসিয়ে কথা বলবেন না।
বজ্রপাতের সময় কোনও নদী, পুকুর বা জলাশয়ে থাকাও ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খোলা জায়গায় বা মাঠের মাঝখানে থাকার সময় যদি বাজ পড়া শুরু হয়, তাহলে মাথা নীচু করে বসে বা শুয়ে পড়ুন।

Advertisement

চামড়ার ভেজা জুতো বা খালি পায়ে থাকা বিপজ্জনক। রাস্তায় বের হতে হলে রাবারের জুতো পরাই ভাল।
প্রতিটি বাড়ি বা উঁচু বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা অবশ্যই রাখতে হবে। তা না থাকলে বজ্রপাতের সময় এক ঘরে সবাই মিলে থাকবেন না। খোলা জায়গায় থাকলেও পারস্পরিক দূরত্ব রাখতে হবে।

বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত, সেই সম্পর্কে রাজ্য সরকার প্রচার শুরু করেছে। বিশেষ করে যাঁরা বাড়ির বাইরে কাজ করেন, তাঁদের ঝুঁকি বেশি থাকে। চাষের জমিতে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের মৃত্যু বেশি হয়, তাই জেলায় জেলায় এখন সচেতনতার প্রচার শুরু হয়েছে।

বজ্রপাতের কারণ কী?
বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যদি বেশি হয় এবং চারপাশে পরিবেশের তাপমাত্রা যদি বাড়ে, তাহলে সেই আর্দ্র ও উত্তপ্ত বায়ু দ্রুতগতিতে ঠান্ডা হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে। দেখা যায়, বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশের তাপমাত্রা নীচের তুলনায় কম থাকে। তাই এই বজ্রগর্ভ মেঘের প্রবাহ নীচ থেকে উপরের দিকে হয়, যাকে বলে থান্ডার ক্লাউড। এই মেঘের মধ্যে জলীয় বাষ্পের বাড়তে থাকলে তাদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়, ফলে ছোট ছোট জলকণা, তুষারকণা তৈরি হয়। এদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলেই বৈদ্যুতিক আধান তৈরি হয়। যখন জলীয় বাষ্পের পরিমাণ পাঁচ মিলিমিটার ছাড়িয়ে যায় যখন জলের অনুগুলো আলাদা হয়ে তড়িৎ ধণাত্মক ও ঋণাত্মক আধান তৈরি করে। ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ তৈরি হয়। আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়।

বজ্রপাতে কীভাবে মৃত্যু হয়?
বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, বজ্রপাতের সময় ১০ কোটি থেকে ১০০ কোটি ভোল্ট শক্তি তৈরি হয়। যেখানে বজ্রপাত হয় তার চারপাশের বাতাসের তাপমাত্রা ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। এই প্রচণ্ড তাপ ও শক্তির মাঝে কোনও মানুষ বা প্রাণী চলে এলে, সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয়। এই জন্য বাজ পড়ার সময় গাছের নীচে বা উঁচু টাওয়ার বা বাড়ির নীচে থাকতে নিষেধ করা হয়। ফাঁকা জায়গাতেও সরাসরি মেঘ থেকে ভূমিতে বিদ্যুৎ প্রবাহের লাইন তৈরি হয়, ফলে এইসব জায়গায় বিপদের ঝুঁকি অনেক বেশি। 

আরও পড়ুন-আকাশ মেঘলা, আজও এই জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement