তৃণমূলে পদ হারানোর পর এবার কর্মীদের কাছে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেললেন কুণাল ঘোষ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের সঙ্গে দেখা হয় কুণালের। তাঁদের সামনেই কাঁদতে দেখা যায় কুণালকে। একইসঙ্গে তৃণমূলে থাকবেন কিনা, সে নিয়ে নিজের অবস্থানও স্পষ্ট করলেন কুণাল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে কুণালকে সরানোর পর বৃহস্পতিবার তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও তাঁকে বাদ দিয়েছে জোড়াফুল শিবির।
তৃণমূলে থাকছেন কি কুণাল?
তৃণমূলে কুণাল থাকছেন কিনা এই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই আবহে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রাক্তন মুখপাত্র বললেন, 'মন থেকে তৃণমূল করলে কেউ সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না। কর্মীদের অপমান করা যাবে না। পদ নয়, পথে আছি। কর্মীদের পাশে আছি। মমতাদি-অভিষেক আজ হোক বা কাল অনুধাবন করবেন, এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে দল চালিয়ে যাব।'
তৃণমূলের একাংশেকে এদিন ফের নিশানা করেছেন কুণাল। বলেছেন, 'দলের উন্নতির জন্য সাধারণ কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে চামচেবাজি করলে হবে না।'
তৃণমূলে আর 'তারকা' নন কুণাল
তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, 'কোনও আফশোস নেই। এই গরমে ঘুরতে হবে না, বেঁচে গেলাম।' তারপরেই তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'মমতাদির বিরোধিতা করা হচ্ছে। এই স্টাররা যত ভরে যাবে দলে, তত উজ্জ্বল হবে দলের।' কুণাল এ-ও বলেছেন, 'যে দলের নেতাদের শুভেন্দু অধিকারীকে চোর বলার আগে ৩ বার বাথরুমে যেতে হয়, তাদের আবার কোন তালিকা!' শুভেন্দুকে 'চোর' বলতে যাঁদের ভাবতে হয়, তাঁরা তারকা হলে ভালই, এমন মন্তব্যও করেছেন কুণাল। লোকসভা ভোটে তৃণমূল ৩০-৩৫টি আসন পাবে বলে এদিন ফের মন্তব্য করেছেন কুণাল।
কেন পদ খোয়ালেন কুণাল?
বুধবার সকালে উত্তর কলকাতার ৩৮ নং ওয়ার্ডে একটি ক্লাবের রক্তদান শিবিরে আমন্ত্রিত ছিলেন কুণাল এবং উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। একই মঞ্চে দু'জনকে দেখা যায়। সেখানেই তাপসের সামনে তাঁর প্রশংসা করেন কুণাল। তিনি বলেন, 'তাপস রায় যত দিন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তত দিন মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। দিন-রাত তাঁর দরজা মানুষের জন্য খোলা থাকত। এলাকার মানুষকে ঠিক করতে দিন, কাকে তাঁরা প্রার্থী হিসাবে বেছে নেবেন। ছাপ্পা ভোট যেন না হয়।' এর কয়েক ঘণ্টা পরই তৃণমূলের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরানো হল কুণালকে। তৃণমূলের তরফে লেখা হয়েছে, 'সম্প্রতি কুণাল ঘোষ এমন অনেক কথা বলেছিলেন যা, দলের মতামতের সঙ্গে মেলে না। তাই এটা বোঝানো অত্যন্ত দরকার ছিল যে, উনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত মত। এর সঙ্গে দলের ভাবনার কোনও সম্পর্ক নেই।' প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবকে নিয়েও এক মন্তব্য করেছিলেন কুণাল। যা ঘিরেও সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। বুধবারের পর বৃহস্পতিবার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের 'তারকা প্রচারকে'র তালিকা থেকেও কুণালকে বাদ দেওয়া হয়েছে।