তৃণমূলে প্রবীণ এবং নবীন দ্বন্দ্বের মধ্যেই বিধায়ক তাপস রায়ের সঙ্গে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতণ্ডা আবার প্রকাশ্যে এল। মঙ্গলবারই সুদীপকে ফের আক্রমণ করেছিলেন তাপস। বুধবার সেই আক্রমণের সুর আরও চওড়া করলেন বরানগরের বিধায়ক। বললেন, '১৫ বছর ধরে আমার সঙ্গে অসভ্যতা করেছে, অসম্মান করেছে, অত্যাচার করেছে। তার বিচার হোক।' একইসঙ্গে সুদীপকে কটাক্ষের সুরে তাপস বলেছেন, 'ও নিজেকে হাতি ভাবে, কিন্তু সাদা হাতি।'
ঠিক কী বলেছেন তাপস?
সুদীপকে নিশানা করে তাপস বলেন, 'সুদীপের জ্ঞান শুনে ওকে তুষ্ট করে চলতে হবে? আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি। ও ভুলে গিয়েছে, আমি ওর থেকে বেশি সময় ধরে দল করছি। ও তো মাঝে ৬ বছর সিনে ছিলই না।' একই সঙ্গে সুদীপকে কটাক্ষের সুরে বরানগরের বিধায়ক বলেছেন, 'ও নিজেকে হাতি ভাবত। মোটেই হাতি নয়, আর যদি হাতি হয়, তা সাদা হাতি, অনুৎপাদক।' উত্তর কলকাতায় সুদীপ সমান্তরাল ভাবে কিছু করছেন বলেও সরব হয়েছেন তাপস। বুধবার তাপসের মন্তব্যের পাল্টা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি সুদীপ।
তৃণমূলে তাপস বনাম সুদীপের লড়াই নতুন নয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে সেই দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছিল। সেই সময় বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষকে উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি করেছিল পদ্ম শিবির। তমোঘ্নের নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে সেই সময় তাপস অভিযোগ করেন যে, সুদীপের কথাতেই বিজেপিতে ওই দায়িত্ব পেয়েছেন তমোঘ্ন। বিজেপির সঙ্গে সুদীপের 'সুসম্পর্ক'রয়েছে বলেও সেই সময় সরব হয়েছিলেন তাপস। যা ঘিরে সুদীপ এবং তাপসের মধ্যে বাগযুদ্ধ চলেছিল। সেই সময় তাপসকে আক্রমণ করে সুদীপ বলেছিলেন,'হাতি চলে বাজার, কুত্তা ভোঁকে হাজার'। 'সম্প্রতি তৃণমূলে প্রবীণ বনাম নবীন বিতর্কের মধ্যে একটি মন্তব্য করেন সুদীপ। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সুদীপকে আক্রমণ করেন তাপস। তার পরই আবার তাপস বনাম সুদীপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল।
সোমবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের এক অনুষ্ঠানে সাংসদ সুদীপ বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যাবে।' সুদীপের এই মন্তব্য ঘিরে দলের অন্দরের একাংশে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার সেই নিয়েই সরব হন তাপস। বলেন, 'মমতাদি থাকবেন না, এ কথা বলেন কী করে উনি। উনি তো নিজেই মাঝে দলে ছিলেন না। তা হলে কি ওঁর বিলম্বিত বোধদয় হয়েছে! উনি যে কথা বলেছেন, মমতা না থাকলে ওঁর সেই হাল হতে পারে।'