ফের শুভেন্দু নিয়ে বিস্ফোরক কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। নাম না করে নিশানা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। ''দলে দিদি ছাড়া কোনও দাদা নেই''। দিনের বেলায় তৃণমূল, রাতে বিজেপি করে এমন নেতাদের শনাক্ত করার নিদান শ্রীরামপুরের সাংসদের। কী বললেন তৃণমূলের আইনজীবী রাজনীতিক ?
মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর আরও চড়ল আক্রমণ। নাম না করে এবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আরও সুর চড়াল তৃণমূল। সৌজন্যে সেই কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়। খানাকুলের সভায় এদিন কল্যাণ বলেন, ''দলে দিদি ছাড়া কোনও দাদা নেই। যারা বলে আমরা অমুকের অনুগামী, তাদের গ্রামে ঢোকা বন্ধ করে দিন। যারা দিনের বেলায় তৃণমূল, রাতে বিজেপি করে তাদের ঘরবন্দি করে ছাড়ুন।''
রাজ্য় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবালী বলছে,তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকি সম্পর্ক ছেদের ইঙ্গিত দিয়েছেন শুভেন্দু। মমতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে তলানিতে ঠেকেছে তা ভালোই বুঝেছেন তাঁর অনুগামীরা। ইতিমধ্য়েই রাজ্য়জুড়ে তাঁর সমর্থনে পোস্টার পড়তে শুরু হয়েছে। সব জায়গায় শুভেন্দু পোস্টারে সেই একই কথন, ''আমরা দাদার অনুগামী।'' পাহাড় থেকে খাস কলকাতায় পড়েছে শুভেন্দু অনুগামীদের পোস্টার। রাজ্য রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিন খানাকুলে 'অমুকের অনুগামী' শব্দ ব্যবহার করে আদতে শুভেন্দুকে নিশানা করেছেন কল্যাণ।
তবে মাত্র দু'লাইনে শুভেন্দুর প্রতি আক্রমণ শেষ করেননি কল্যাণ। খানাকুলে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন,''১৯৯২ সালে দলটা তৈরি হয়েছে। সিপিএমের মতো দল কে হারাতে তিল তিল করে সংগঠন গড়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। ২০১৬ সালে মমতার মুখ সামনে রেখেই দাদারা ভোটে জিতেছেন। এখনও দলে ২৯৪টা আসনে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যাই মুখ। যে দাদারা দল ছেড়ে বিজেপিতে যেতে চান, তাদের জন্য় রাস্তা খোলা। তারা যত তাড়াতাড়ি চাইলে দল থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন।''
দলে শুভেন্দু বেঁকে বসায় দু-মুখো নীতি নিয়েছে তৃণমূল। নরমে-গরমে অধিকারীকে বাগে আনতে চাইছে দল। একদিকে শুভেন্দুর সমস্যা বুঝতে প্রশান্ত কিশোর থেকে সৌগত রায়কে দিয়ে কথা বলানো হয়েছে। অন্য়দিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের এই নেতাকে চাপে রাখতে মাঠে নামানো হয়েছে কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতাকে। যারা নিত্যদিন শুভেন্দুকে নাম না করে আক্রমণ করে চলেছেন। কদিন আগে যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন শুভেন্দু। প্রকাশ্য়ে সেই ক্ষোভ জানান তিনি। শুভেন্দু বলেন, অনেকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। এলাকার মানুষ সেই অপমানের জবাব দেবে।
শুক্রবারই রাজ্য় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু। 'হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি' ছাড়াও আরও বেশকিছু পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক। ইতিমধ্য়ে শুভেন্দুর ছেড়ে যাও মন্ত্রীপদ নিজেই সামলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল রাতেই যার নোটিফিকেশন জারি হয়েছে। তবে মন্ত্রিপদ ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি শিশির অধিকারীর পুত্র। এমনকী দলের সদস্য়পদও ছাড়েননি তিনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও তাঁর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দল।