উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রস্তাবও দিয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ। সুকান্তের এই প্রস্তাব নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এই নিয়ে সরব হল বাংলার শাসকদল। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সুকান্তের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, 'বাংলাকে বিভাজন করার প্রচেষ্টা। প্রথম থেকে রুখেছি। সুকান্তের এই বক্তব্য সমর্থন করি না। প্রশ্রয় দিই না। তীব্র ভাবে প্রতিবাদ করছি।' সুকান্তকে তুলোধনা করেছেন বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাও। বলেছেন, 'এই প্রস্তাব অবাস্তব। পারলে রাজ্য ভাগ করুন।'
অন্য দিকে, বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেছেন, 'আমরা বাংলা ভাগের পক্ষে নই। অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কাঞ্চনকন্যা তৈরি করেছেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গের জন্য বাজেটে বরাদ্দ চিঁড়ে ভেজে না। বিজেপি মনে করে সীমারেখা অটুট রেখেই উন্নয়ন সম্ভব।'
সুকান্তের বক্তব্য প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সংসদ চত্বরে সুদীপ এ-ও বলেছেন, 'বিমল গুরুঙের সঙ্গে গোর্খাল্যান্ডের চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এখন উত্তরবঙ্গ নিয়ে বলছে।' সুকান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপিরই বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। কার্শিয়ঙের বিধায়ক বলেছেন, 'উত্তরবঙ্গকে নিয়ে সুকান্তের মন্তব্য অবাস্তব। কোনওদিনই সম্ভব নয়। লোকসভা ভোটের ফলে হতাশ উনি। ২০২৬ সালের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। পারলে রাজ্য ভাগ করুন। মিথ্যা প্রচার করে লাভ নেই।' অন্য দিকে, এই নিয়ে বিতর্কের আবহেই বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজ এদিন ফের পৃথক কোচবিহারের দাবি তুলেছেন।
ঠিক কী বলেছেন সুকান্ত?
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেছেন, 'আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের কী কী সাদৃশ্য রয়েছে, তা বলেছি। প্রস্তাব দিয়েছি, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এই প্রস্তাব দিয়েছি। এবার প্রধানমন্ত্রী বিচার করবেন। যদি যুক্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গের অংশ হিসাবে, তাহলে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বেশি পরিমাণে পাওয়া যাবে। উন্নয়ন হবে। আশা করি, রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকবে না। সহযোগিতা পাব।'
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি করেছিলেন বিজেপির নেতারা। অতীতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছিলেন তিনি। উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছিলেন গ্রেটার কোচবিহারের নেতা তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজও। এবার সেই প্রস্তাব খোদ প্রধানমন্ত্রীকে দিলেন সুকান্ত, যা ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনা করা হয় বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে প্রায়শই অভিযোগ করে থাকে বিজেপি। এই প্রেক্ষাপটে সুকান্তের এহেন প্রস্তাব রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে।