ক্রমেই তেতে উঠছে সন্দেশখালি। মঙ্গলবারও দিনভর সন্দেশখালির ঘটনা ঘিরে উত্তাল হল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহে সন্দেশখালিতে জনসভা করার কথা ঘোষণা করল তৃণমূল। ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে জনসভা করবেন বলে মঙ্গলবার ঘোষণা করলেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। এদিন সন্দেশখালি ১-ব্লকের কালীনগরের দিকে রওনা দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। দলে ছিলেন পার্থ, বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। অন্য দিকে, সন্দেশখালির ঘটনায় শাসকদলকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
সন্দেশখালির ঘটনায় পার্থ বলেছেন, 'মা, বোনেরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীক। এটা উত্তরপ্রদেশ নয়। যেখানে ধর্ষণ করে নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা বাংলা, এখানে মায়েদের সম্মান নষ্ট হয় না।'
অন্য দিকে, সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা খারিজের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কোন এলাকাগুলি উত্তেজনাপ্রবণ, সেগুলি চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৪৪ ধারা জারি প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, 'নির্যাতিতা মহিলাদের মুখ বন্ধ করতে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে। বিজেপির বিধায়করা যাতে পরশুদিন এলাকায় যেতে না পারেন, সেজন্য চক্রান্ত হচ্ছে। মুখ্যসচিব, জেলাশাসক, এসপি বসিরহাটকে বলব মমতার পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না।'
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। তিনি বলেছেন, 'এই জটিল পরিস্থিতিতে মানুষকে উস্কানি না দিয়ে আমাদের সকলকে রাজ্য প্রশাসনকে সহযোগিতা করা উচিত। যা যা করার রাজ্য সরকার করছে। আমি রোজ যোগাযোগ রাখছি আধিকারিকদের সঙ্গে। রাজনীতি করা উচিত নয়। আগুন নেভানো আমাদের কাজ। আগুনে ঘি ঢালা নয়।'
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গোলমালের ঘটনার পর থেকেই তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই এলাকা। সম্প্রতি শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। জোর করে জমি দখল, মহিলাদের উপর অত্যাচার, যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই নতুন করে তেতে রয়েছে সন্দেশখালি। গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তম, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে। ধৃত প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার।