Bengal Kite Market: আজ বিশ্বকর্মা পুজো। গতকাল থেকেই বেশ কিছু জায়গায় পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুজো আসার খবর যেমন জানিয়ে দেয় মাঠভরা কাশফুল, তেমনই বিশ্বকর্মা পুজোর খবর মেলে আকাশের দিকে তাকালে, ফড় ফড় শব্দ করে ওড়া ঘুড়ির ঝাঁকে।
রং-বেরঙের পেটকাটি, ময়ূরপঙ্খী, চাঁদিয়াল, হরহরিয়া, মোমবাতি, ছক্কা ঘুড়ির ঝাঁক আকাশে, আর মাটিতে ‘ভো কাট্টা’... মানে ঘুড়ির লড়াই জেতার ঘোষণা! বিশ্বকর্মা পুজো মানেই গোটা দিনজুড়ে ঘুড়ি ওড়ানো। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই হাতের সুতোর টানে আকাশে ঘুড়ির লড়াই জেতার সংকল্প। এক কথায়, বিশ্বকর্মা পুজো মানেই ঘুড়ি, লাটাই আর মাঞ্জার খেলা।
কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ির বাজারের হাল কেমন? মেটিয়াবুরুজ, খড়দহের ঘুরির কারিগরদের মন ভাল নেই। কারণ, ঘুড়ির বাজার আর আগের মতো নেই। দাম বেড়েছে ঘুড়ি তৈরির কাগজ, কাঠি, আঠার। ফলে বেড়ে গিয়েছে ঘুড়ির দামও। কিন্তু লাভের পরিমাণ কমালেও খদ্দের আর আগের মতো নেই বলে আক্ষেপ খড়দহের এক ঘুড়ির কারিগর-বিক্রেতা সন্তু দাসের। তাঁর কাছে ২৪ ইঞ্চি থেকে শুরু করে সাড়ে ২৭ ইঞ্চির ঘুড়িও রয়েছে। কিন্তু খদ্দের আগের মতো আর ভীড় করে না তাঁর কাছে।
সন্তু বলেন, “এক রিম ঘুড়ির কাগজ কিনতে খরচ পড়ে ন’শো থেকে হাজার টাকা। এর সঙ্গে আছে ঘুড়ির কাঠির খরচ। সাড়ে ২৭ ইঞ্চি কাঠির দাম আটশো-সাড়ে আটশো টাকা। ২৯ ইঞ্চির ১,০০০ কাঠির দাম প্রায় সাড়ে ন’শো থেকে হাজার টাকা। তার সঙ্গে আঠা-সুতোর খরচও রয়েছে। এত টাকার মাল কিনে সাড়ে সাতশো থেকে আটশো পিস ঘুড়ি তৈরি করা যায়।”
টিটাগড়ের এক মুদি দোকানে ঝোলানো কয়েকটা ছোটা ভীম, বাল গনেশ ঘুড়ি। বিক্রেতা আক্ষেপের সঙ্গে জানালেন, ‘বিক্রি নেই’। তিনি জাজান, প্লাস্টিকের বাহারি ঘুড়ি সস্তায় মিললেও এখনও সাবেকি কাগজের ঘুড়ির চাহিদাই বেশি। প্লাস্টিকের ঘুড়ি যেখানে ৫-৮ টাকায় পাওয়া যায়, সেখানে কাগজের তৈরি ঘুড়ির দাম শুরু হচ্ছে ১০ টাকা থেকে। সাড়ে ২৭ ইঞ্চির ঘুড়ির দাম ১৫-১৬ টাকা। তা-ও দাম দিয়ে লোকে কাগজের ঘুড়িই কিনছে।
সন্তু দাস বলেন, “ছেলেপুলেদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। খেলার মাঠ, ফাঁকা জায়গা কমেছে। বাড়ির ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়ালেও ফ্ল্যাটের ছাদে সে সুযোগ কম বলেই শুনি। তাছাড়া, বইপত্র-মোবাইল থেকে মুখ তোলার সুযোগ পেলে তবে তো ঘুড়ি ওড়াবে! তাই ঘুড়ি বানানো এখন আগের থেকে অনেক কমিয়ে দিয়েছি। ক’জন কিনবে?”