প্রচন্ড গরমে পুড়ছে বাংলা। জৈষ্ঠ্য শেষেও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতির বদল নেই। বাংলার অধিকাংশ জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘরে বসে ফ্যান চালিয়েও ঘামতে হচ্ছে। তাপমাত্রার ঊর্ধ্বমুখী পারদ এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা, এই দুইয়ের জেরে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা আম আদমির। কবে ফিরবে স্বস্তি? যদিও আশার কথা শোনাল না আলিপুর হাওয়া অফিস, বরং ফের একবার তাপপ্রবাহের বার্তাই দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ১০ জুন শনিবার পর্যন্ত গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে।
দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ চলবে
তীব্র গরম আর তাতেই একেবারে নাজেহাল হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। তবে এখনই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উল্টে আগামী তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। শুষ্ক এবং গরম আবহাওয়া নাজেহাল করতে পারে গোটা দক্ষিণবঙ্গ কে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে গরম থেকে মুক্তির আশা খুব একটা নেই। এমনটাই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের কলকাতাসহ সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রয়েছে। উপকূলের ৪ জেলাতেও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি
ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৪০ ছুঁয়েছে। এরই সঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতাও দেওয়া হয়েছে। কার্যত গলদঘর্ম অবস্থা। তবে শুধু দক্ষিণবঙ্গেই নয়, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে হাওয়া অফিসের তরফে। পূর্বাভাস অনুযায়ী উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ জেলা মালদাতেও তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রয়েছে। তাপ প্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে পার্বত্য জেলা ছাড়া উত্তরবঙ্গের সব জেলাতে।
বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি এই জেলাগুলিতে
তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসের মাঝেই বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি কমবে না। মূলত উত্তর-পশ্চিমের শুকনো বাতাস প্রভাব বিস্তার করবে। সঙ্গে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তি চরম উঠবে উপকূলের জেলাগুলিতে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎসহ বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার থেকে এই বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
কলকাতার আবহাওয়া
প্যাচপ্যাচে গরমের মাঝে মঙ্গলবার এক পশলা বৃষ্টিতে ভিজেছিল কলকাতার একাধিক এলাকা। তবে এই বৃষ্টি যে শুধু কয়েক মুহূর্তের স্বস্তি, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। মঙ্গলবারের মতো আজ, বুধবারও তাপমাত্রা কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। কলকাতার আবহাওয়া গত দু'দিন ধরে রীতিমতো অস্বস্তিকর। গতকাল শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। আজ দিনভর আংশিক মেঘলা আকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। বেলা যত বাড়বে গরম ও অস্বস্তি ততই বাড়বে। এর মাঝেই আজ ও বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে শহরে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে তাপমাত্রা কমবে না। হাওয়া অফিস বলছে,আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে।
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি কবে থেকে?
বাংলায় বর্ষা ঢোকার স্বাভাবিক তারিখ ৭ জুন। স্বাভাবিক দিনে বর্ষা কোনভাবেই বাংলায় ঢুকছে না। দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই নিম্নচাপ এর প্রভাবে আরব সাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়েছে। পয়লা জুন কেরলে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করার স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু সেখানে এখনো মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করেনি। ফলে বাংলায় এখনও বর্ষার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বাংলায় পাকাপাকিভাবে বর্ষা আসতে এখনও অনেক দেরি আছে। ফলে আগামী কয়েকদিন আরওৃঅস্বস্তিকর এই গরম সইতে হবে সাধারণ মানুষকে।