উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার দাবি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের বিরোধী প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল। আগামী সোমবার বিধানসভায় এই নিয়ে প্রস্তাব আনা হবে। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
এই প্রসঙ্গে, শোভনদেব বলেছেন, 'বিজেপির কয়েক জন নেতা এবং কয়েক জন সাংসদ বাংলাকে ভাগ করার দাবি তুলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বে অন্তর্ভুক্ত করতে। কেউ বলেছেন কয়েকটি জেলাকে আলাদা করতে। এটা খুবই দু:খজনক। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলার মানুষ এটা রুখবে। বিজেপির ষড়যন্ত্র ফাঁস করতে বিধানসভায় এই নিয়ে প্রস্তাব আনা হবে।'
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিয়েছেন সুকান্ত। যা ঘিরে সরগরম রাজনীতির ময়দান। সুকান্ত বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের কী কী সাদৃশ্য রয়েছে, তা বলেছি। প্রস্তাব দিয়েছি, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এই প্রস্তাব দিয়েছি। এবার প্রধানমন্ত্রী বিচার করবেন। যদি যুক্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গের অংশ হিসাবে, তাহলে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বেশি পরিমাণে পাওয়া যাবে। উন্নয়ন হবে। আশা করি, রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকবে না। সহযোগিতা পাব।'
এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বাংলার মালদা এবং মুর্শিদাবাদ-সহ দেশের ৫ জেলাকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। গত বৃহস্পতিবার সংসদে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার সাংসদ বলেছেন, 'কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না করা হলে হিন্দুরা শেষ হয়ে যাবে।' এনআরসি কার্যকর করার দাবিও জানিয়েছেন নিশিকান্ত। মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সংসদে নিশিকান্ত বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ এবং বাংলা থেকে মালদা ও মুর্শিদাবাদের লোকজন এসে আমাদের এলাকার মানুষকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। গ্রামের পর গ্রাম ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এটি একটি খুব গুরুতর বিষয় এবং আমি এটি রেকর্ডে বলছি। আমি যা বলেছি তা ভুল হলে আমি পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।' তাঁর আরও অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ, মালদা থেকে লোকজন এসে হিন্দুদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ করছেন।। ঝাড়খণ্ড পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না।
এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, বিজেপি বাংলা বিভাজনের পক্ষে নয়। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আসুক বাংলা ভাগ করতে। দেখিয়ে দেব, কী করে রুখতে হয়।'